মার্চ পর্যন্ত রপ্তানি ১৫ হাজার ৩৫৭ টন
মো. আখতারুজ্জামান : [১] দেশে প্রতিবছর কমছে চিংড়ি রপ্তানি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সঙ্গে বেড়েছে দেশীয় চাষিদের উৎপাদন খরচ। পাশাপাশি বিশ্বে ভেনামি চিংড়ির চাহিদা বাড়ায় এমন ধারাবাহিক অবনতি বলে দাবি রপ্তানিকারকদের। তবে এর জন্য দেশীয় বাজারে চাহিদা বাড়ার অজুহাত মৎস্য অধিদপ্তরের। [২] দেশে যে কয়টি খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আসে তার মধ্যে অন্যতম চিংড়ি। সাম্প্রতিক সময়ে পাল্লা দিয়ে কমছে মাছটির বিদেশ যাত্রা। আন্তর্জাতিক বাজারে দরদামে টিকতে না পারায় ছিটকে যাচ্ছে বাংলাদেশের নিজস্ব জাত গলদা আর বাগদা। এতেই ধস নেমেছে দেশীয় বাজারে। কপালে হাত পরেছে চাষিদের।
[৩] এক চিংড়ি চাষি বলেন, আমরা আগে যেভাবে চিংড়ি চাষ করতাম এখন সেভাবে করতে পারছি না। এর অন্যতম কারণ এখন পোনার দাম অনেক বেশি। আরেক চিংড়ি চাষি বলেন, যখন উৎপাদন বেশি ছিল তখন দাম কম ছিল। কিন্তু এখন মাছ সংকট, গরমের কারণে উৎপাদন কম হচ্ছে।
[৪] মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গেল অর্থবছর ২০ হাজার ৬২০ টন হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি হয়। কিন্তু চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে মাত্র ১৫ হাজার ৩৫৭ টন। যেভাবে রপ্তানি হচ্ছে তাতে গেল বছরের তুলনায় খাতটি থেকে বৈদেশিক মুদ্রা কম আসবে বলে দাবি রপ্তানিকারকদের।
[৫] তারা বলছেন, অর্থনৈতিক মন্দায় সস্তা ভেনামির দিকে ঝুকছে বিশ্বভোক্তারা। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক এস হুমায়ুন কবীর বলেন, বিশ্ববাজারের চাহিদা তো ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু সেই জায়গাটা ধরে নিয়েছে ভেনামি চিংড়ি।
[৬] কম দামে বিশ্ববাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। আমাদের বাগদা এবং গলদা চিংড়ি আগে ব্যাপকভাবে মানুষের ঘরে ঘরে রান্না হতো, বিভিন্ন রেসিপিতে মানুষ ব্যবহার করতো। কিন্তু অধিক দামের কারণে এখন এটা ক্রমান্বয়ে কমতে কমতে হোটেল-রেস্টুরেন্টের মধ্যে কিংবা পর্যটক এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। [৭] তবে মৎস্য অধিদপ্তরের দাবি, দেশেই বেড়েছে বাগদা গলদার চাহিদা। তাই বিদেশে যাচ্ছে না এসব দেশীয় মাছ। মৎস্য অধিদপ্তরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ) ড. মো. আবদুর রউফ বলেন, দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে বলেই আমাদের অভ্যন্তরীণ চিংড়ি উৎপাদন বেড়েছে।
[৮] সেই সঙ্গে মানুষও চিংড়ি খেতে পছন্দ করছে, তারা দেশীয় চিংড়িগুলো ক্রয়ও করছে বেশি। এতে স্বাভাবিকভাবেই রপ্তানি কিছুটা কমে যাবে। কারণ, যেহেতু দেশে চাহিদা বেশি এবং জনগণও চিংড়ি খেতে পছন্দ করছে, সেহেতু দেশের চাহিদা পূরণ করেই তো আমরা বিদেশে রপ্তানি করবো। এজন্য রপ্তানি কিছুটা কমেছে।