তৃতীয়বারের ন্যায় চট্টগ্রামের চেয়ে পঞ্চগড়ে বেশি চা উৎপাদন
মো. আখতারুজ্জামান : [১] বাংলাদেশ চা বোর্ডের আওতায় গেল মৌসুমে মোট চা উৎপাদন হয়েছে ১০ কোটি ২৯ লাখ ১৮ হাজার ৪৯৮ কেজি। এর মধ্যে সমতলের চা অঞ্চল পঞ্চগড়ে উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার ২৩০ কেজি। যা গেল মৌসুমের চেয়ে এক লাখ ৬৫ হাজার কেজি বেশি।
[২] মোট উৎপাদনের ১৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ তৈরি চা উৎপাদন করে টানা তৃতীয়বারের মত এবারও চট্টগ্রামকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে সমতলের চা। আর পঞ্চগড়সহ চার জেলায় কাঁচা চা পাতা উৎপাদন হয়েছে ৮ কোটি ৬১ লাখ ৪৬ হাজার ৭০৪ কেজি। [৩] প্রতিবছর চা চাষের পরিধির সাথে বাড়ছে নতুন নতুন চা কারখানা। তবে এর মাঝেও হতাশা কাটছে না চা চাষিদের। বলছেন সরকার নির্ধারিত মূল্যে চা পাতা কিনছেন না কারখানা মালিকরা।
[৪] অন্যদিকে কারখানা মালিকরা বলছেন, অকশন মার্কেটে দাম কম যাওয়ায় তাদেরও কিছু করার নেই। চায়ের মান ভালো নয় বলেও জানান তারা। এদিকে ভালো মানের পাতা উৎপাদনে চাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে দাবি চা বোর্ডের কর্মকর্তাদের।
[৫] পঞ্চগড়ের আঞ্চলিক চা বোর্ডের উন্নয়ন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আমির হোসেন বলেন, কৃষকরা যেন আরও ভালো মানের চা পাতা উৎপাদন করতে পারে এজন্য তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া যারা কারখানা মালিক রয়েছে তাদেরকে দক্ষ টেকনিশিয়ার দ্বারা ভালো মানের চা তৈরির জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
[৬] সমতলের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী ও দিনাজপুরে গেল মৌসুমে মোট চা চাষ হয়েছে ১২ হাজার ১৮৫ একর জমিতে।
[৭] চা বোর্ডের তথ্য মতে, ২০২০ সালে উত্তরবঙ্গের পঞ্চগড়সহ পাঁচ জেলায় ১০ হাজার ১৭০ একর জমির ১০টি নিবন্ধিত ও ১৭টি অনিবন্ধিত চা বাগান ও ৭ হাজার ৩১০টি ক্ষুদ্রায়তন চা বাগানে ৫ কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৬ কেজি সবুজ কাঁচা চা পাতা উত্তোলন করা হয়। সে পাতা থেকে ১৮টি চা ফ্যাক্টরিতে ১ কোটি, ৩ লাখ ১০ হাজার কেজি তৈরি চা উৎপাদিত হয়। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে ১ হাজার ৪৯০ একর জমি নতুন করে চা চাষের আওতায় আসে। তৈরি চায়ের উৎপাদন বাড়ে ৭.১১ লাখ কেজি। [৮] ২০২১ সালে এ অঞ্চলে চা আবাদের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৪৩৩ দশমিক ৯৪ একর। উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার কেজি। সে তুলনায় গত এক বছরে চা আবাদ বেড়েছে ৬৪৫ দশমিক ১২ একর। উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার মধ্যে পঞ্চগড়ে ১০ হাজার ২৩৯ দশমিক ৮০ একর জমিতে চা উৎপাদিত হয়েছে। অন্যান্য জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে ১ হাজার ৪৫৭ দশমিক ২৯ একর, লালমনির হাটে ২২২ দশমিক ৩৮ একর, দিনাজপুরে ৮৯ একর ও লালমনিরহাটে ৭০ দশমিক ৫৯ একর জমিতে এই চা আবাদ হচ্ছে। যা ২০২২ সালে বিগত বছরের তুলনায় ৩২ লাখ ১৯ হাজার ২২৬ কেজি চা উৎপাদন বেশি হয়েছে।