অধ্যাপক আবু আহমেদ
সর্বজনীন পেনশন স্কিম সরকার ভালো উদ্দেশ্যে করেছে। এখন এই স্কিম তারা তৃণমূল পর্যন্ত নিতে চায়। কিন্তু তৃণমূলে নিলে একটি সমস্যাও আছে। কী সেটা? যারা বুঝবে না তারা সরকারকে দোষারোপ করবে। যতো বছর এই টাকা দিতে হবে, ততোদিন হয়তো অনেকে টাকা দিতে পারবেন না। তাও আমি বলবো, সরকারকে আপাতত সীমিত আকারেই এটা করা উচিত। সরকার ইউনিয়ন পর্যায়ে ডাক দিচ্ছে সাধারণকে, পেনশন স্কিম করার জন্য। কিন্তু সারা পেলে শহর থেকেই অনেক বেশি সাড়া পাওয়ার কথা। শহরে না করে ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকার প্রচার করছে, এতে সরকারের উল্টো দুর্নাম হবে। দুর্নাম হবে এজন্য হবে যে ১৫ বছর টাকা দেওয়ার পর পেনশন এভেইলএভেল হবে। এর মধ্যে কেউ মারা গেলে নমিনি টাকা তুলতে অসুবিধায় পড়তে পারে। আবার সেই লোক যদি কিস্তি পুরোটা না দিতে পারে, সেক্ষেত্রে টাকা তুলতে পারবে না। এখানে নানা ধরনের বিষয় আছে। এছাড়াও তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারবে কিনা বা কাজকর্ম থাকবে কিনা, সেটা নিয়েও মানুষের যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
সরকার সর্বজনীন পেনশন নিয়ে মানুষকে বোঝাতে ব্যর্থ না সফলÑ এর কোনোটাই বলবো না। শুধু সরকারকে অনুরোধ করবো, ধীরে ধীরে এগোতে। কোটি কোটি টাকা নিলেও বিনিয়োগ করার জায়গা নেই। সরকার জনগণ থেকে টাকা নিয়ে কোথায় বিনিয়োগ করবে? সেখানে বিনিয়োগ করার কথা বলা আছে, তারা টাকা কোথায় কোথায় খাটাবে? টাকা খাটানোর জায়গাটাতো আমি খুব সীমিত দেখি। সর্বজনীন স্কিম নিয়ে কোনো কোনো দেশে কেলেঙ্কারী হয়েছে, পরে সরকারকে জনগণের টাকা ফেরত দিতে হয়েছে নতুন টাকা ছাপিয়ে। সেজন্য ম্যানেজমেন্টের বাইরে টাকা না নেওয়াই ভালো। এই উদ্যোগের দুর্বল দিক হলো, এখানে মানুষের বিশ্বাসের বিষয় আছে। আবার সরকার টাকা নিয়ে সেটা কোথায় খাটাবে? আবার সরকারকে তো এই টাকা কাজে লাগিয়ে ইনকামও করতে হবে। ইনকাম না করলে মানুষকে টাকা ফেরত দেবে কীভাবে? এমন অনেক প্রশ্ন উঠছে। সে বিষয়গুলোতে সরকারের পরিষ্কার বক্তব্য থাকা উচিত। লেখক : অর্থনীতিবিদ