বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১৭ লাখ টন ধান ও চাল কিনবে সরকার
সোহেল রহমান : [১] আসন্ন বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১৭ লাখ টন ধান ও চাল কিনবে সরকার। এরমধ্যে ৫ লাখ টন ধান, ১১ লাখ টন সেদ্ধ চাল, এক লাখ টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি বোরো ধানের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ধান ৩২ টাকা, আতপ চাল ৪৪ টাকা ও সেদ্ধ চাল ৪৫ টাকা। এছাড়া ৩৪ টাকা দরে ৫০ হাজার টন গম কেনা হবে। আগামী ৭ মে থেকে ধান-চাল কেনা শুরু হবে এবং ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এ সংগ্রহ অভিযান চলবে।
[২] রোববার সচিবালয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
[৩] জানা যায়, গত বছর বোরো মৌসুমে ধানের সংগ্রহমূল্য ছিল ৩০ টাকা ও চালের সংগ্রহমূল্য ছিল ৪৪ টাকা।
[৪] বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ধান যদি ৫ লাখ টনের বেশি কেনা যায়, সেটা কেনা হবে। কৃষকের সুবিধার্থে আরও ধান আমরা কিনবো। এক্ষেত্রে সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। কমিটিতে সেটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে। হাওরসহ যেখানে যেখানে ধান কাটা শুরু হয়েছে, সেখানে ৭ মে থেকে ধান সংগ্রহ শুরু হবে।
[৫] তিনি বলেন, বোরো ধান ও চালের উৎপাদন খরচ গত বছরের থেকে বেশি হওয়ায় এবার সংগ্রহ মূল্য কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। দামের কারণে কৃষক একটু উৎসাহিত হোক। অন্যথায় কৃষক অন্য শস্যে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের চালের প্রয়োজন।
[৬] চালের দাম এখন সহনীয় কি না জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমি তো মনে করি সহনীয় আছে। সারাবিশ্বের চালের বাজার একটু রেকি করা হলে অনেকের ভুল ভেঙে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
[৭] প্রসঙ্গক্রমে তিনি জানান, বর্তমানে সরকারি গুদামে চাল ও গম মিলিয়ে মোট খাদ্যশস্যের মজুত ১২ লাখ টন রয়েছে।
[৮] মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা ঘিরে প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেয়ার জন্য বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি নাÑ জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা সবসময় সজাগ আছি। খাদ্যের ঘাটতি হয়েছে, এমন কথা বাংলাদেশে বলা যায় না। এবার উৎপাদন ভালো হয়েছে।
[৯] পহেলা বৈশাখ থেকে চালের বস্তায় ধানের জাতের নাম ও মিলগেট মূল্য লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে কি নাÑ জানতে চাইলে তিনি বলেন, অলরেডি সেটি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। আপনারা মিলগুলোতে খোঁজ নেন। তবে মার্কেট থেকে পুরোনো চাল যেতে সময় লাগবে। নতুন চাল ঢোকা শুরু হয়েছে।
[১০] এ বিষয়ে তো চালকল মালিকরা সময় চেয়েছিলÑ এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সময় দিলে সময় চাইতেই থাকবে। এখানে সময়ের কোন ব্যাপার নাই। ? তাদের ৫৫ দিন সময় দেয়া হয়েছিল, এটা যথেষ্ট।
[১১] তিনি আরও বলেন, আমরা এরই মধ্যে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে মিটিং করেছি, জেলা প্রশাসকরা মিলারদের সঙ্গে মিটিং করেছে। তারপরও যদি বাস্তবায়ন না হয়, আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
[১২] গম আমদানি প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে বন্দরে ১ লাখ ২০ হাজার টন গম এসে পৌঁছেছে। আরও তিন লাখ গম কেনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।