টানা ৫ কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে সূচক নিম্নমুখী
মাসুদ মিয়া: [১] দেশের শেয়ারবাজার টানা পতনের মধ্যে রয়েছে। ঈদের পরে ৫ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে ৫ কার্যদিবসই মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। গতকাল সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার দিনের শুরু হয়েছিল বড় উত্থান প্রবণতা দিয়ে। কিন্তু সেই উত্থান পরে বড় পতনে রূপ নেয়। যা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। [২] এবিষয়ে বাজার বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসরায়েলে ইরানের রকেট হামলার প্রেক্ষিতে বিশ্বের অন্যান্য শেয়ারবাজারের মতো বাংলাদেশের শেয়ারবাজারেও বড় পতন হয়েছে। কিন্তু পরের দিন থেকে বিশ্বের শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের শেয়ারবাজার পতনের বৃত্তেই আটকে আছে। আর যেভাবে পতন হয়েছে, এর কোনো কারণ বাজার সংশ্লিষ্টরাখুঁজে পাচ্ছেননা। তাঁরা বলছেন, বড় বিনিয়োগকারীরা কম দামে শেয়ার হাতিয়ে নেয়ার জন্যই এখন পতন ঘটাচ্ছেন।
[৩] এবিষয়ে বিনিয়োগকারী রাজ্জাক বলেন, শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তিন মাস ধরে শেয়ারবাজার মন্দার মধ্যে রয়েছে। তবে মাঝে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতা দেখে গেলেও সার্বিকভাবে বাজার পতনের মধ্যে রয়েছে। জামান আরও বলেন, অধিকাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারী লোকসানের মধ্যে রয়েছেন। বরং দিন যত যাচ্ছে বিনিয়োগ করা পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। [৪] গতকাল লেনদেন শুরু হয়েছিল উত্থান প্রবণতা দিয়ে। দিনের শুরুতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হয়। এরপর গতানুগতিক ধারায় পতনে রূপ নেয়। লেনদেনের আধা ঘন্টার মধ্যেই ডিএসইর সূচক আগের দিনের চেয়ে ৩১ পয়েন্ট কমে যায়। এরপর আবার বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। বেলা সাড় ১১টায় সূচক আগের দিনের চেয়ে ৮ পয়েন্টের বেশি উঠে লেনদেন হয়। তারপর আবারও পতন। এরপর ওঠা-নামার মধ্যে চলে লেনদেন। লেনদেনের শেষ পর্যায়ে ডিএসইর সূচক ৪২ পয়েন্ট পড়ে যায়। যা অ্যাডজাস্টমেন্টের পর ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩২.৯৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬৫৩ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরীয়াহ সূচক ৮.০১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৩৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২.১৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৮২ পয়েন্টে।
[৫] গতকাল ডিএসইতে ৪৭৮ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫২২ কোটি ৫১ লাখ টাকার। আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে ৪৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ডিএসইতে ৩৯৩টি প্রতিষ্ঠানের ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৫টির, কমেছে ২৮৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টির।
লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো:-এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, গোল্ডেনসন,স্যালভো কেমিক্যাল, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, তৌফিকা ফুডস, রবি অজিহাটা, ফু-ওয়াংসিরামিক, বেস্ট হোল্ডিংস,প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স ও সেন্ট্রালফার্মা।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো:প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেনসন, শাশা ডেনিমস, রবি অজিহাটা, ফার্মাএইডস, স্যালভো কেমিক্যাল, পূবালী ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, দেশ বন্ধুপলিমার ও কোহিনূর কেমিক্যাল।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো:-ইন্টারন্যাশনাললিজিং, এডিএন টেলিকম, খুলনাপ্রিন্টিং, ক্যাপিটেক গ্রামীন ব্যাংক গ্রোথ ফান্ড, সোনারগাঁ টেক্সটাইল, ডেল্টাস্পিনার্স. লংকা-বাংলাফাইন্যান্স, ইস্টার্নক্যাবলস, জুটস্পিনার্স ও প্রগতী ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ ১৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৮ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।সিএসইতে ২১৯টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩২টির, কমেছে ১৬৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টি প্রতিষ্ঠানের। আগের দিন সিএসইতে ২১১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে দর বেড়েছিল ৩৬টির, কমেছিল ১৫৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৮টি প্রতিষ্ঠানের।