গাছ লাগনো সহজ কিন্তু বাঁচানো কঠিন
এমডি আলী জামান
সারাদেশে তীব্র তাপদাহ চলছে।যারা সারা দিন রাত্রী এসি’তে অবস্থান করে, তারা ছাড়া প্রায় সকলের প্রান ওষ্ঠাগত। এইটাই হবার ছিল। আগামীতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। প্রকৃতিতে কার্বন নিস্বরণ, আর তা শোষণ করার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা-তথা গাছের স্বল্পতার কারণে প্রকৃতির প্রতিশোধ আরো নির্মম হবে।
এ অবস্থায় অনেক বিজ্ঞজন গাছ লাগাবার জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। জানিনা, এনারা নিজেরা কয়টা গাছ লাগিয়েছেন। গাছ লাগানো খুব কঠিন কাজ নয়। তবে এর পরিচর্যা বেশ কঠিন। তার চেয়ে সহজ বৈদ্যুতিক ফ্যান, আর সামর্থ থাকলে এসি কেনা। এসিগুলো নিজের গাড়ী বাড়ী ঠান্ডা করে ঠিকই,কিন্তু কার্বন নিস্বরণ বহুগুনে বাড়িয়ে দেয়।যার কারণে পরিবেশ আরো উত্তপ্ত হচ্ছে। অথচ কেউ এর বিরোধিতা করে কথা বলছে না। যেহেতু এর বিরুদ্ধে কোন আইন নেই, তাই বিরোধিতাও একপ্রকার অমুলক।
সেক্ষেত্রে করনীয় কি? ছাত্রলীগ নাকি পাঁচ লাখ গাছ লাগাবে? আরো অনেকেই গাছ লাগাবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। সাধু উদ্যোগ। কিন্তু এই গাছে পানি দেবে কে? গরু ছাগলের কবল থেকে নিরাপত্তা কিভাবে হবে?বিশেষভাবে চেষ্টা করলে হয়তো সম্ভব। কিন্তু বাস্তব অবস্থা হলো- একটু দুরের কথা আমরা ভাবতে চাই না। তাৎক্ষণিক সমস্যা আমরা তাৎক্ষণিক সমাধান করতে চাই।
অথচ বাস্তবে তা হয় না। এই ধরুন, তাপদাহ কমে গেলে আর জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসলে, আমরা আগের অবস্থা দ্রুতই ভুলে যাবো।
গাছ লাগানো তেমন জটিল কঠিন নয়, আর বাস্তবায়ণও হয়তো একেবারে অসম্ভব নয়। ব্যক্তি পর্যায়ে গাছ তো কমবেশী অনেকেই লাগায়। সরকার চাইলে-শিল্প কারখানা, যানবাহন আর ইটভাটা থেকে কার্বন নিস্বরণ অনেকাংশেই কমানো সম্ভব।
তবে সবচেয়ে সহজ আর কার্যকর উপায় হলো- দেশে বিদ্যমান গাছগুলো সংরক্ষণ করা, বাঁচিয়ে রাখা। সবাই কিছুটা আন্তরিক আর সচেষ্ট হলে- এইটাই সহজতর উপায়। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতা উল্টোটাই বলে। বৃক্ষ নিধন যথানিয়মেই চলতে থাকবে। লেখক : ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ব্যবসায়ী এসোসিয়েশনের সভাপতি।