অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সাংবাদিকদের
নিজস্ব প্রতিবেদক : [১] বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ফলে সাংবাদিকেরা আগের মতো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারছে না। এক মাস ধরে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন সাংবাদিকেরা।
[২] কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন একসময়ে এই কড়াকড়ি আরোপ করেছে, যখন নানা সমস্যায় আর্থিক খাত টালমাটাল। বেশির ভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাহকেরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ ধারে কার্যক্রম পরিচালনা করছে সংকটে পড়া কয়েকটি ব্যাংক। আবার ঋণখেলাপিদের দাপট আগের মতোই আছে। এমন পরিস্থিতিতে অপরিকল্পিতভাবে ব্যাংক একত্রকরণ শুরু হয়েছে।[৩] বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তে সাংবাদিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকেরা গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান নেন। [৪] বিষয়টি সমাধানে বেলা ১১টার দিকে অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠক করেন। এতেও কোনো সমাধান হয়নি; এখন আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করবে ইআরএফ।
[৫] গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাত বিষয়ে ইআরএফ’র বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে গভর্নর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন টপ সিক্রেট ডকুমেন্টস নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ব্যাংকিংখাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরেন। তার প্রেক্ষিতে ব্যাংকিংখাতের বিভিন্ন তথ্যের স্পর্শকাতরতা ও মার্জার বিষয়ে রিপোর্টারদের নিয়ে দুটি কর্মশালা আয়োজনের প্রস্তাব দেয় ইআরএফ। [৬] আগামী ৮ মে’র পরে ব্যাংকিংখাতের স্পর্শকাতরতা নিয়ে কর্মশালাটি আয়োজন করতে গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রকে তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন। মার্জার বিষয়ে পরবর্তীতে কর্মশালা আয়োজন করা হবে বলে জানান গভর্নর। [৭] সার্বিক পরিস্থিতিতে রিপোর্টারদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বাধাহীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে করণীয় নির্ধারণে ইআরএফ’র প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধার নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ইআরএফ পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। [৮] ক্ষুব্ধ সাংবাদিকেরা বলেন, বড় ঋণখেলাপি ও অনিয়মে জড়িত ব্যবসায়ী ও ব্যাংকগুলোকে গণমাধ্যম থেকে আড়ালে রাখতে বর্তমান গভর্নর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর মাধ্যমে তার প্রকৃত চরিত্র প্রকাশ পাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর আগে কখনো এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
[৯] বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে সাংবাদিকেরা ব্যাংকের নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র (প্রবেশ পাস) নিয়ে শুধু মুখপাত্রের কাছে যেতে পারবেন। তবে কোনো কর্মকর্তা যদি সাংবাদিকদের পাস দেন, সে ক্ষেত্রে তারা শুধু সেই কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন। তবে আগের মতো তারা অবাধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বিভাগে প্রবেশ করতে পারবেন না।