তালিকা পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের রাজধানীতে ২ লাখের বেশি চলাচলে অনুপযোগী গাড়ি
॥এস.ইসলাম জয় : [১] রাজধানীতে চলাচলের অনুপোযোগী ২০ বছরের অধিক ২ লাখের বেশি গাড়ীর তালিকা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
[২] গত ৩১ মে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে এক মতবিনিময় সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, কোনো অবস্থাতে ২০ বছরের বেশি মেয়াদী গাড়ী রাজধানীতে চলতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে বিআরটিএ-কে গাড়ীর তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে।
[৩] পরিবেশ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ এপ্রিল ঢাকায় চলাচলরত ২ লাখের বেশি বিভিন্ন ধরনের গাড়ির তালিকা দিয়েছে বিআরটিএ। এসব গাড়ি প্রতিনিয়ত যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে রাজধানীর ব্যস্ততম সড়কে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। এতে প্রায়শই দেখা যায় দীর্ঘ যানজট। পাশাপাশি এসব গাড়ী বায়ু দূষণ করছে। যা নগরবাসীকে নানা ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
[৪] সূত্রে আরও জানা যায়, পরিবেশমন্ত্রী দেশের বাহিরে থাকায় মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ীর তালিকা নিয়ে এ বিষয় এখনো আলোচনা হয়নি। তালিকাটি এখন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রাজীব সিদ্দিকীর কাছে রয়েছে। [৫] জানা যায়, চলতি সপ্তাহের শেষে এসব মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ীর মালিকদের সাথে আলোচনায় বসতে পারে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
[৬] পরিবেশবিদ ও স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, রাজধানী থেকে ইকোনোমিক লাইফ অতিক্রান্ত গাড়ীগুলো সরানো উচিত। এ গাড়িগুলো পরিবেশের উপর মারাত্নক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। ইকোনোমিক লাইফ অতিক্রান্ত হওয়ার পর গাড়িগুলোর ইঞ্জিনের ক্ষমতা কমে আসে ফলে ফুয়েল কনজামশন বেশি হয়। যা বায়ু দূষণে সরাসরি ভূমিকা রাখে।
[৬] তিনি সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে রাজধানীতে পরিবহন সংকট দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যস্থার কথাও চিন্তা করতে হবে। সরকার পরিবহন ব্যবসায়ীদের প্রণোদনার বিষয়টিও ভাবনায় রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
[৭] পরিবেশ ও অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, আমাদের দেশের আইনের সঠিক প্রয়োগ হয় না। বিধায় আইনে ২০ বছরের বেশি মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ী এখানো ঢাকা শহরে চলে। জনকল্যাণের জন্য ভালো এমন জিনিসের বিষয়ে সরকারকে কঠোর হতে হবে। আইন প্রয়োগ করে এসব গাড়ী বাতিল করতে হবে। অন্যায় সুবিধা বন্ধ করতে হবে।
[৮] রাজধানী থেকে গাড়ীগুলো বাতিল করতে বাস মালিক পক্ষ যদি সরকারের কাছে সুবিধা বা শর্ত আরোপ করে এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই তাদের আইন বহির্ভূত দাবি মানা যাবে না। কেননা তারা তো জানে বিআরটিএ’র রুলস। কত বছর তারা রাজধানীতে গাড়ীগুলো চালাতে পারবে। জানার পরও কেন তারা ভায়োলেট করছেন। লক্ষ্য নির্ধারণ করে আইন প্রয়োগ করতে হবে। পরস্পর যোগসাযোশ করাতে আমাদের লক্ষ্য ঠিক থাকে না। তাই এ বিষয় কোনো আপোষ করা যাবে না।
[৯] তিনি বলেন, ওই গাড়ীগুলো পরিবেশের যথেষ্ট ক্ষতি সাধন করে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ী কোনো ভাবেই চলতে দেওয়া হয় না। কিন্তু আমাদের দেশে এ গাড়ীগুলো এখনও চলছে। বিশ্বে বায়ু দূষণে প্রায়ই ঢাকা এক দুই এর মধ্যে থাকে।