চার কর্মদিবস পর শেয়ারবাজারে মূল্য সংশোধন হলেও ডিএসইর লেনদেন বেড়ে ১ হাজার ১০৮ কোটি টাকা
মাসুদ মিয়া: [১] দেশের শেয়ারবাজার টানা চার কর্মদিবস উত্থানের পর গতকাল মঙ্গলবার সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস সামান্য মূল্য সংশোধন হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক সামান্য পতন হলেও প্রায় ৫ ডজন কোম্পানির শেয়ার ছিল ক্রেতাশুন্য। [২] গত চার কর্মদিবসে ডিএসইর সূচক বেড়েছে ১৫৮ পয়েন্ট। আগের দিন সূচক বেড়েছে ৩৫ পয়েন্টের মতো। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল লেনদেনও শুরু হয়েছিল উত্থান প্রবণতায়। লেনদেনের প্রথম ভাগে ১০টা ৪৪ মিনিটে ডিএসইর প্রধান সূচক ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হয়। তারপর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা তোলার প্রবণতা জোরদার হলে সেল প্রেসার বেড়ে যায়। যার ফলে বাজার সংশোধনের পথে নেমে আসে। বেলা সোয়া ১টায় সূচক ১৪ পয়েন্টের বেশি কমে লেনদেন হতে দেখা যায়। তবে শেষ ভাগে বাই প্রেসার কিছুটা বাড়তে থাকায় সূচক কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়। [৩] দিন শেষে ডিএসইর সূচক পৌনে দুই পয়েন্ট কমে স্থির হয়।
এর আগে গত ২৯ এপ্রিল থেকে বাজার নেতিবাচক প্রবণতা থেকে ইতিবাচক প্রবণতায় টার্ন নেয়। গত চার কর্মদিবস বাজার বেশ ভালো ছিল। এই চার কর্মদিবসে ডিএসইর সূচক ফিরেছে ১৫৮ পয়েন্ট। চার কর্মদিবস পর গতকালের বাজারে কিছুটা সংশোধন দেখা যায়। তবে আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে। যা বাজারের জন্য ইতিবাচক হিসাবে দখছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। [৪] সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই চার কর্মদিবসে যেসব বিনিয়োগকারীরা নতুন করে শেয়ার কিনেছিলেন, তারা সবাই মুনাফায় রয়েছেন। তাদের মুনাফা তোলার চাপে বাজারে কিছুটা মূল্য সংশোধন হয়েছে। তবে সেটা খুবই সামান্য। তাঁদের মতে, বাজার দু’একদিন এভাবে মিশ্র প্রবনতায় ঘুরাফিরা করতে পারে। তারপর আবারও সামনের দিকে এগুবে। [৫] গতকাল ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১.৭৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৭২৫ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরীয়াহ সূচক ৬.৪৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৫৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬.৪৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ৪০ পয়েন্টে।
[৬] গতকাল ডিএসইতে ১ হাজার ১০৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১০৯৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকার। যা আগের দিনের চেয়ে ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা বেশি।
ডিএসইতে ৩৯৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩১ টির, কমেছে ২২২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪১টির। লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো:- বেস্ট হোল্ডিংস, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ,গোল্ডেনসন, তৌফিকাফুডস, ওআইমেক্স ইলেক্ট্রোড, ওরিয়নইনফিউশন, ওরিয়ন ফার্মা, আলিফইন্ডাস্ট্রিজ, মালেকস্পিনিং ও সী পার্লবীচ। দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো: আইসিবি গোল্ডেনজুবিলীমি. ফা., জিকিউবলপেন, আইসিবি, ফনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্টমি. ফা., সাইফ পাওয়ার, রাহিম টেক্সটাইল, প্রাইমব্যাংক ফার্স্টআইসিবিমি. ফা., বেস্ট হোল্ডিংস, এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড ও এন আর বিসি ব্যাংক। দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানিহলো:-সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়ন ইনফিউশন, ফার্মা এইডস. ইাভানা ফার্মা, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, সাফকোস্পিনিং, সেন্ট্রালফার্মা, আরএসআরএম স্টীল, বিডি থাই ও এমারেল্ডওয়েল।
[৬] অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
সিএসইতে ২৪৪টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১১টির, কমেছে ১১৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টি প্রতিষ্ঠানের। আগের দিন সিএসইতে ২২৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে দর বেড়েছিল ১৫৬টির, কমেছিল ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৩টি প্রতিষ্ঠানের।