
সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর

এস. ইসলাম জয় : [১] সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে অর্থবিভাগকে কাজ করার নির্দেশও দেন তিনি। একনেকে ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এরমধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫ হাজার ২০৩ কোটি টাকা, আর উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়ন বিশেষ করে কোরিয়া সরকারের যৌথ উদ্যোগে সাহায্য সংস্থা কইকা, বিশ্ব ব্যাংক ও চীনের অর্থায়ন ৩৬০ কোটি টাকা।
[২] বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার।
[৩] সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা সাংবাদিকদের জানান পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব সত্যজিৎ কর্মকার। এসময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম, প্রতিমন্ত্রী শহিদুজ্জামান সরকার ও পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) এমদাদউল্লা মিয়ান, কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) আব্দুল বাকী এবং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য কাওছার আহমেদ।
[৪] পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন, শেয়ারবাজারে আমাদের যে সরকারি কোম্পানিগুলো আছে, সেগুলো যাতে শেয়ারবাজারে অন্তর্ভুক্ত হয়। অর্থবিভাগকে এ বিষয়ে কাজ করার জন্য অনুশাসন দিয়েছেন।
[৫] কি ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠানকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির মধ্যে আনা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, তিনি সব প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্তির কথা বলেননি। তিনি অর্থবিভাগকে বলেছেন, শেয়ারবাজারে উপযুক্ত হওয়ার বিষয়ে যাতে অর্থবিভাগ কার্যকর উদ্যোগ নেয়। অর্থসচিব যাচাই-বাছাই করবেন কারা কারা আসতে পারে, কোন কোন প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, সেটি বিবেচনা করে যাতে অর্থবিভাগ প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠায়।
[৬] প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন সমাপ্তযোগ্য প্রকল্প আমরা যেন অল্প কিছু টাকা দিয়ে হলেও শেষ করি। ৩৩৯টি সমাপ্তযোগ্য প্রকল্পের মধ্যে এবার পাঁচটি প্রকল্পের মালামাল জুনের মধ্যে ইনস্টল করা যাবে না। এ কারণে পাঁচটি প্রকল্প বাদে বাকি ৩৩৪টি প্রকল্প ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হবে।
[৭] প্রধানমন্ত্রীকে না জানিয়ে খুলনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নাম ব্যবহার করায় তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন জানিয়ে সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন করেছেন। এ প্রকল্পে তার দুটি অবজারভেশন আছে। প্রথমত, শেখ হাসিনা নামটি বাদ দিতে হবে, দ্বিতীয়ত, প্রকল্পে ম্যুরাল যেটি আছে সেটি বাদ দিতে হবে। তবে মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন এ নাম পরিবর্তন করতে হলে এখন আইন পরিবর্তন করতে হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, ভবিষ্যতে তিনি প্রকল্পে তার নাম ব্যবহারের অনুমতি দেবেন না। এটি প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতা।
[৮] পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম বলেন, এই একনেক সভায় আমরা দুটি প্রকল্পে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। একটি হচ্ছে ঢাকার বাইরে বার্ন ইউনিট হচ্ছে চিটাগাংয়ে। আর একটি হচ্ছে খুলনা মেডিকেল কলেজ। এ দুটি প্রকল্প হলে দেশের মানুষের উপকার হবে।
[৯] একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব স্ট্যাটাটিকস সার্ভিস বেজড অন প্ল্যাটফর্ম প্রকল্প। শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন ও মৌলিক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প। চীনা এইড প্রজেক্ট অব বার্নইউনিট অব চিটাগাং মেডিকেল কলেজ হসপিটাল ইন বাংলাদেশ প্রকল্প। গুরুত্বপূর্ণ পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প: পিরোজপুর ও ঝালকাঠি জেলা প্রকল্প। বরিশাল জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। প্রোগ্রাম ফর সাসটেইনবিলিটি ইন দ্য টেক্সটাইল অ্যান্ড লেদার সেক্টর প্রকল্প। ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের উৎপাদন পদ্ধতি ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেসে রূপান্তরকরণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প।
[১০] ঢাকা জেলায় বিদ্যমান সার্কিট হাউস ভবনের স্থলে নতুন অত্যাধুনিক সার্কিট হাউস ভবন নির্মাণ প্রকল্প। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের নবসৃজিত গাজীপুর ব্যাটালিয়নের অবকাঠামোগত বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ প্রকল্প। আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (ইউআরপি) : ডিডিএম অংশ তৃতীয় সংশোধিত প্রকল্প।
