![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)
ক্রনি ক্যাপিটাল ও দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা, দেশের ব্যাংক খাতের সংকট রাজনৈতিক
নাসির উদ্দিন
দেশের ব্যাংক খাতের সংকট রাজনৈতিক। সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা ও সম্পৃক্ততায় এই লুটপাট এবং সংকটের সৃষ্টি। সরকারের সক্রিয় সহযোগিতা না থাকলে ব্যাংক খাতে এমন দুর্বৃত্তপনার অর্থনীতি চালু অসম্ভব। অর্থনীতির বিদগ্ধজনরা এমনটিই মনে করেন। লুটপাটের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় সমস্যা ইচ্ছেকৃত খেলাপি ঋণ। এই খেলাপি ঋণকে উৎসাহিত করাই সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব রকমের সুবিধা দিয়ে খেলাপি হতে উৎসাহিত করছে সরকার। আহম মোস্তফা কামালের সময়ে এ প্রবণতা ব্যাপক হয়েছে। একটার পর একটা আইন পরিবর্তন করে খেলাপিদের সুবিধা তৈরি করে দিয়েছেন তিনি। ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন হচ্ছে এর সর্বশেষ সংযোজন।
ক্রনি পুঁজিবাদে জনগণের অর্থ লুটপাটের প্রধান অস্ত্র এই খেলাপি ঋণ। সেটা অবশ্যই ইচ্ছাকৃত খেলাপী। যা পুরোপুরি রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় সৃষ্ট। ঋণের ধরণ দেখলেই বিষয়টি স্পষ্ট। বড়ো অংকের এসব ঋণ বিতরণ হয়েছে নামে বেনামে। তাও আবার ভুয়া কাগজপত্রে, ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে, ভুল ঠিকানায়, স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে কিংবা মিথ্যা স্বাক্ষরে। অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের দিক থেকে কোনো তদারকিই ছিল না। সরকারের যুক্ততা ছাড়া এমন অন্যায় সুযোগ সৃষ্টি অসম্ভব। অর্থাৎ জনগণের টাকা কৌশলে লুটেপুটে নেয়ার প্লট পূর্ব পরিকল্পিত। ফলে সরকার আইন দিয়ে এই ক্রনি ক্যাপিটাল বা দুর্বৃত্তের পুঁজিবাদ থামাবে এমন কল্পনা হবে অলীক। যারা এমনটি ভাবেন তারা আমার মতো বিকৃত বোকা। যদিও কেবলমাত্র রাজনৈতিক সদিচ্ছার পথেই এই ইচ্ছাকৃত দুর্বৃত্তায়ন ঠেকানো সম্ভব।
একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলামের খেলাপী ঋণ নিয়ে বই ‘বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে খেলাপি ঋণ’। এখানে তিনি বলেছেন দেশের ৭৭ শতাংশ খেলাপি ঋণ রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে। তাঁর মতে, দেশে খেলাপী ঋণের পরিমাণ ৪ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপী হিসেবে দেখানো হয় এক লক্ষ কোটি টাকার কম। বাংলাদেশ ব্যাংক সত্য লুকায়। মামলায় থাকা ২ লাখ কোটি টাকা হিসাব থেকে বাদ রাখে। আর অবলোপন করা ৫৫ হাজার কোটি টাকাও খেলাপী দেখায় না। জনগণ আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ হবে, এমন বিবেচনায় তারা প্রকৃত সত্য প্রকাশ করে না। প্রশ্ন হচ্ছে, এতো লুটপাটের পরও আমানতে ঘাটতি হয় না কেন? উত্তর সহজ দেশের দেড় কোটি মানুষ রেমিট্যান্স পাঠায়। সেটা ব্যাংকে আমানত হিসেবে জমা হয়। এজন্য আমানতের ঘাটতি দেখা যায় না। এসব আমানত থেকেই দুর্বৃত্তরা ঋণ নিয়ে লুটপাট করে। ঋণ ফেরত দেয় না। ইচ্ছাকৃত খেলাপি হচ্ছে বেশি। এর পুরোটাই হয় রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার প্রভাবে। এসব খেলাপি ঋণের বড় অংশই আবার পাচার হয়ে যায়।
প্রশ্ন হলো, সরকার কেন এমন কাজে সহযোগী হতে যাবে? দেশকে এমন বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়ার উদ্দেশ্য কী? সহজ উত্তর। প্রথমত: আর্থিক ফায়দা। দ্বিতীয়ত: দেশের সকল অর্থনৈতিক সক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত করে আপন নেক্সাস সৃষ্টি করা। তাদের আশা এই নেক্সাস বর্তমান ক্ষমতাসীনদের রাজনীতির প্রধান চালিকা শক্তি হয়ে ভবিষ্যতে ভূমিকা রাখবে। জনসমর্থনে ভাটার টানের আতঙ্ক থেকেই এমন ভাবনা হতে পারে। নাহয় মাননীয়দের এতো টাকার কি দরকার? ১৩-৫-২৪। ফেসবুক থেকে
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)