মাসুদ মিয়া: [১] দেশের শেয়ারবাজার পতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না। টানা দরপতনের কারেনে শেয়ারবাজার থেকে ধারাবাহিকভাবে কমছে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা। চলতি মে মাসের ২১ দিনেই বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব কমেছে প্রায় দেড়শোটি। আর চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিদেশিদের বিও হিসাব কমেছে তিনশোটির বেশি।
[২] এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, শেয়ারবাজারের ওপর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আস্থা পাচ্ছেন না, যে কারণে তারা শেয়ার বিক্রি করে চলে যাচ্ছেন। ফ্লোর প্রাইস এক দফায় তাদের আস্থা নষ্ট করেছে। এখন দাম কমার সর্বনিম্ন সীমা ৩ শতাংশ বেঁধে দেওয়ার পর বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট আরও প্রবল হয়েছে। [৩] তারা বলছেন, শেয়ারবাজারকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। বাজারে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অযাচিত হস্তক্ষেপ ঠিক নয়। শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হলে বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা থাকবে না।
বিও হলো শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্রোকারেজ হাউস অথবা মার্চেন্ট ব্যাংকে একজন বিনিয়োগকারীর খোলা হিসাব। এই বিও হিসাবের মাধ্যমেই বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে লেনদেন করেন। বিও হিসাব ছাড়া শেয়ারবাজারে লেনদেন সম্ভব নয়।
[৪] বিও হিসাবের তথ্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল)। এই সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, ২১ মে শেষে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৯০ হাজার ৬৮৮টি। যা এপ্রিল মাস শেষে ছিল ১৭ লাখ ৮৮ হাজার ৮৩১টি। এ হিসাবে মে মাসের ২১ দিনে বিও হিসাব বেড়েছে এক হাজার ৮৫৭টি।
[৫] সিডিবিএলের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দেশি বিনিয়োগকারীদের নামে বিও হিসাব আছে ১৭ লাখ ১৮ হাজার ৭১টি। যা এপ্রিল শেষে ছিল ১৭ লাখ ১৬ হাজার ১৫৪টি। অর্থাৎ মে মাসের ২১ দিনে দেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব বেড়েছে এক হাজার ৯১৭টি। অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর দেশি বিনিয়োগকারীদের নামে বিও হিসাব ছিল ১৭ লাখ ৭৬৫টি। এ হিসাবে চলতি বছরের এসময়ে দেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব বেড়েছে ১৭ হাজার ৩০৬টি।
[৬] বর্তমানে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব আছে ৫৫ হাজার ৪৭টি। এপ্রিল শেষে এ সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার ১৮৩টি। অর্থাৎ চলতি মাসের ২১ দিনে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব কমেছে ১৩৬টি। আর গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের নামে বিও হিসাব ছিল ৫৫ হাজার ৩৪৮টি। এ হিসাবে চলতি বছরে বিদেশি ও প্রবাসীদের বিও হিসাব কমেছে ৩০১টি।
[৭] বর্তমানে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে পুরুষ বিনিয়োগকারীদের নামে বিও হিসাব আছে ১৩ লাখ ৪০ হাজার ৯৩৮টি। এপ্রিল শেষে এ সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৬৫টি। অর্থাৎ পুরুষ বিনিয়োগকারীদের হিসাব বেড়েছে ১ হাজার ৬৭৩টি। অন্যদিকে বর্তমানে নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব রয়েছে ৪ লাখ ৩২ হাজার ১৮০টি। এপ্রিল শেষে এ সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৩২ হাজার ৭২টি। এ হিসাবে নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব বেড়েছে ১০৮টি।