![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রচেষ্টা অনুকরণীয়
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/uploads/2024/05/biman-md-327x400.jpg)
শফিউল আজিম
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পদার্পণের পরপরই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। আকাশপথে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য আকাশে ‘শান্তির নীড়’ শ্লোগান নিয়ে, ১৯৭২ সালের ০৪ জানুয়ারি প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার-১২৬ জারীর মাধ্যমে একটি ডিসি-৩ এয়ারক্রাফট দিয়ে শুরু হয় বিমানের যাত্রা। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে প্রথম অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশে বিমান পরিবহনের শুভ সূচনা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার, সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৪ বছরের কম সময় পেলেও এই স্বল্প সময়ে বহরে যুক্ত করেন সর্বমোট ১২টি উড়োজাহাজ। এই ১২টি উড়োজাহাজের মাধ্যমে তিনি ৫টি অভ্যন্তরীণ, ৪টি আঞ্চলিক ও ১টি দূরবর্তীসহ মোট ১০টি গন্তব্যে নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করেন।
জাতির পিতার যোগ্য উত্তরসূরী, বিচক্ষণ ও দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উড়োজাহাজ ক্রয়ের জন্য রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি প্রদানের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের ২১টি উড়োজাহাজ বিমান বহরে যুক্ত করেছেন এবং ওয়ার্ল্ড এভিয়েশন সেক্টরে বাংলাদেশের অবস্থানকে শক্তিশালী ও সুসংহত করেছেন। বিমানের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ তিনি নিজস্ব উড়োজাহাজসমূহের মনোরম ও চিত্রাকর্ষক নামকরণ করেছেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ রূপকল্পের সাথে সংগতি রেখে এবং তার সার্বিক দিকনির্দেশনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কার্যক্রম বাস্তবে প্রতিফলিত হচ্ছে। যার মাধ্যমে বিমানের সকল কার্যক্রমে সর্বাধুনিক প্রযু্ক্িত ও কার্যকরি ব্যবস্থাপনার সমন্বয়, যাত্রী সেবা, ফ্লাইট অপারেশন ও সার্বিক এয়ারলাইন্স পরিচালনার গুণগত মান উন্নয়নের মধ্য দিয়ে স্মার্ট এয়ারলাইন্স করার পরিকল্পনা ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের কার্যক্রম চলমান আছে।
স্মার্ট টিকিটিং সিস্টেম- কম্পিউটারাইজড এয়ারলাইন্স রিজার্ভেশন সিস্টেম বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স একটি প্রযুক্তি ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে একজন যাত্রীর টিকেট ক্রয় থেকে শুরু করে যাত্রার সমাপ্তির সকল কার্যক্রম যুগোপযোগী ও যাত্রীবান্ধব হয়েছে। বিমানের ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপস, কল সেন্টার, বিমান সেলস সেন্টার, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সিসহ সকল ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে সম্মানিত যাত্রীরা বিমানের যেকোন ফ্লাইটের সময়সূচী ও প্রাপ্যতা যাচাই, পছন্দের আসন বুকিং ও ক্রয় করা এবং ওয়েব চেক-ইন করতে পারেন।
ইন্টিগ্রেটেড পেমেন্ট সিস্টেম- ৩৪টি ব্যাংকিং চ্যানেলের ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, আই-ব্যাংকিং ও মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেম, ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ঘরে বসে টিকেট ক্রয় করা যায়। এছাড়াও ক্রয়কৃত টিকেটের তারিখ পরিবর্তন ও অতিরিক্ত ব্যাগেজ অ্যালাউন্স ক্রয় করা যায়। যাত্রীরা বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে টিকেট ক্রয় করতে পারেন। বিমান স্মার্ট উদ্যোগ ব্যবহার করে প্রযুক্তি ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে ক্রয়কৃত টিকেটের পেমেন্ট নিষ্পত্তি করে থাকে, যা অটোমেটেড অডিট করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। জাতীয় বাজেটে বিমান এর জন্য কোন বরাদ্দ থাকে না। অর্থাৎ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সম্পূর্ণ নিজস্ব আয়ে পরিচালিত একটি সংস্থা। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য রাজস্ব আয় করেছে এবং লাভের ধারা বজায় রেখে সরকারের লাভজনক কোম্পানিসমূহের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ধরে রেখেছে। পাশাপাশি বিমান এর নিজস্ব আয় থেকে বহরে থাকা উড়োজাহাজসমূহের কিস্তি পরিশোধসহ লিজে থাকা কয়েকটি উড়োজাহাজও ক্রয় করেছে, যা বিমানের আর্থিক সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। দূরদর্শী পরিচালনা-পর্ষদ, নির্বাহী পরিচালকরা, দক্ষ ও কর্মঠ জনবল, আধুনিক উড়োজাহাজ, ডিজিটাল সেবার অন্তর্ভুক্তিকরণের মাধ্যমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হয়ে উঠেছে যাত্রীবান্ধব ও স্মার্ট এয়ারলাইন্স। লেখক : বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)