৪৫ বাংলাদেশির বিনিময়ে মিয়ানমার ফেরত গেল ১৩৪ বিজিপি-সেনা সদস্য
কক্সবাজার প্রতিনিধি : [১] মিয়ানমারে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন ৪৫ বাংলাদেশি নাগরিক। গতকাল রোববার সকালে কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশি এসব নাগরিকদের হস্তান্তর করে মিয়ানমারের বিজিপি প্রতিনিধি দল। বিনিময়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি ও সেনার ১৩৪ সদস্যকে হস্তান্তর করেছে বিজিবি কর্তৃপক্ষ।
[২] মিয়ানমার নৌ-বাহিনীর একটি জাহাজে করে বাংলাদেশের জলসীমায় তাদের নিয়ে আসা হয়। পরে কোস্ট গার্ডের একটি জাহাজে করে সকাল ১০টার দিকে এসব বাংলাদেশি নাগরিককে কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে নিয়ে এসে হস্তান্তর করে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।
[৩] তিনি আরও জানান, বাংলাদেশি নাগরিকদের হস্তান্তরের আগে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি ও সেনার ১৩৪ সদস্যকে হস্তান্তর করে বিজিবি কর্তৃপক্ষ। সকাল সোয়া সাতটায় মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের বিজিবির তত্ত্বাবধানে টেকনাফ থেকে নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে নিয়ে আসা হয়। মিয়ানমারের নৌ-বাহিনীর জাহাজযোগে দুপুরে তারা নিজ দেশে ফেরত যাবেন।
[৪] সূত্র জানায়, সকালে নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএর ঘাটে মিয়ানমারের বিজিপি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে মিয়ানমার দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং বিজিবির রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মেহেদি হোসাইন কবিরসহ বিজিবি কর্মকর্তা এবং কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেনের সঙ্গে হস্তান্তর উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করে।
[৫] পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমারের উইংয়ের মহাপরিচালক মিয়া মো. মাঈনুল কবির জানিয়েছেন, মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ ইউএমএস চিন ডুইন মিয়ানমার থেকে ৪৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়ে রোববার ভোরে কক্সবাজার সাগর উপকূলে পৌঁছায়। শনিবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিটওয়ে থেকে জাহাজটি রওনা দেয়। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের জের ধরে পালিয়ে আসা বিজিপি ও সেনার ১৩৪ সদস্য ফেরত যাওয়ার বিনিময়ে মিয়ানমারে কারাভোগে থাকা ৪৫ বাংলাদেশিকে ফেরত দেয় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।
[৬] তিনি জানান, বিভিন্ন সময় মিয়ানমারের বাহিনীর হাতে আটক হয়ে কারাভোগে থাকা ৪৫ বাংলাদেশি নাগরিকের বাড়ি কক্সবাজার, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলায়। মিয়ানমারের বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সিটওয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের অবিচল প্রচেষ্টার ফলে আরও বাংলাদেশি নাগরিকদের তাদের পরিবারের কাছে পাঠানো সম্ভব হয়েছে।
[৭] এর আগে গত ২৫ এপ্রিল মিয়ানমারে কারাভোগে থাকা ১৭৩ জন বাংলাদেশি দেশে ফেরেন। একইসঙ্গে ওইদিন বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ২৮৮ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও সেনা সদস্যকে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ।
[৮] এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৩৩০ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি, সেনা ও কাস্টমস কর্মকর্তাকে স্বদেশে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ।
[৯] এরপর গত ২৫ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত কয়েক দফায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও সেনার ১৩৪ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
[১০] গত ১২ মে কক্সবাজার সফরে আসা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ জানিয়েছিলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসাদের মধ্যে কয়েকজন লে. কর্নেল ও ২ জন মেজরও রয়েছেন। যারা এতদিন বিজিবির হেফাজতে ছিলেন।