![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)
বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত নিয়ে সরকারের নীতি দ্বিমুখী এবং বরাদ্দ অপর্যাপ্ত : সিপিডি
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/uploads/2022/02/CPD-400x264.jpg)
সোহেল রহমান : [১] বাজেটে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাত নিয়ে সরকার দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করেছে। বাজেটে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়তা দিতে জ্বালানির রূপান্তর ও টেকসই বিরোধী কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ চাহিদার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছেÑ তা অপ্রয়োজনীয় ও উচ্চাভিলাষী। এদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা করা হলেও বাজেটে এ খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা হয়নি এবং বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়িয়ে আইএমএফ-এর প্রেসক্রিপশন ফলো করছে সরকার। ?
[২] রোববার রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক ইন? সেন্টারে ‘জাতীয় বাজেটে ২০২৪-২৫-এ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত: প্রস্তাবিত পদক্ষেপ কি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারে’ শীর্ষক এক সংলাপে এসব অভিমত ব্যক্ত করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থার গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
[৩] সিপিডি বলেছে, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত একটি চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছে। এমতাবস্থায় বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ এবং গৃহস্থালি গ্যাসের সঞ্চালনের ক্ষেত্রে যথাযথ নীতি, পরিকল্পনা ও আর্থিক বাজেট প্রয়োজন। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বাজেট কাঠামো টেকসই হওয়া দরকার। সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া বরাদ্দ ও প্রকল্প বাস্তবায়নে টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। সরকারের ভুলনীতির কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)-এর লোকসান ২০২৫ সাল নাগাদ ১৯৬ শতাংশ বেড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়াবে। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি এবং সরকারের ভর্তুকি দেয়ার পরও এ লোকসান হবে।
[৪] গবেষণা সংস্থাটির প্রস্তাবে লোডশেডিং কমিয়ে আনা; কোনো নতুন জীবাশ্ম জ্বালানি-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তহবিল বন্ধ করা; নবায়নযোগ্য জ্বালানির দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য অধিক বাজেট বরাদ্দ ও প্রণোদনা প্রদান; বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশেষ আইনটি দ্রুত বাতিল করা; ?চুক্তির মেয়াদ শেষে পুরনো ও মেয়াদ-উত্তীর্ণ ব্যয়বহুল ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে সরে আসার বিষয়ে সরকার যে অঙ্গীকার করেছে সেটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
[৫] অন্যদিকে জ্বালানির বিষয়ে বলা হয়েছে, আমদানি করা এলএনজির ওপর বেশি নির্ভর করা বৈশ্বিক মূল্য পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের জন্য সেটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এ প্রেক্ষিতে এলএনজি আমদানি বাড়ানোর পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ গ্যাস অনুসন্ধানে আরও গ্যাস কূপ খননের জন্য বরাদ্দ আরও বাড়ানো প্রয়োজন।
[৬] মূল প্রবন্ধে বলা হয়, কিছু নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাজেটে প্রতিফলিত হয়েছে, কিন্তু কিছু প্রতিশ্রুতি সেখানে প্রতিফলিত হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে ভাড়া ও অদক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবসর, জলবিদ্যুৎ আমদানি ও স্মার্ট গ্রিড ইত্যাদি। এছাড়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু যার জন্য খুব স্বতন্ত্র আর্থিক ব্যবস্থার প্রয়োজন ছিল, তা সমাধান করা হচ্ছে না।
[৭] সিপিডি বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে নবায়নযোগ্য জ্বালানি-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্প্রসারণের দিকে যথেষ্ট মনোযোগ না দেয়ার প্রবণতা রয়েছে। তবে অন্যদিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন ও ব্যবহারে উৎসাহ প্রদানে বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিমাণে কম হলেও উদ্যোগটি প্রশংসার যোগ্য, কারণ এটি দেশে কার্বন লক-ইন ভাঙার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে। পাশাপাশি ড্রিল করা গ্যাসের বিতরণ এবং ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ককে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এটিও প্রশংসাযোগ্য। কারণ ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের আপগ্রেডেশনের সঙ্গে গ্রিডে নবায়নযোগ্য শক্তির একীকরণের অনেক সম্পর্ক রয়েছে।
[৮] মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সরকার বলছে দেশে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে, যা চাহিদার চেয়ে বেশি। অথচ শহর ও মফস্বল এলাকায় প্রচুর লোডশেডিং হচ্ছে। এমনকী শীতেও?? লোডশেডিং হয়েছে, তাহলে সমস্যা আসলে রয়ে গেছে। অন্যদিকে আইএমএফ-এর পরামর্শে সরকার বিদ্যুতে ভর্তুকি এবং বরাদ্দ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এতে এ খাতের সমস্যা সমাধান হবে না।? বরং এর ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাবে?? এবং সারা দেশে লোডশেডিং আরও বাড়বে।? এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তারা।
[৯] ভর্তুকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার একদিকে বিদ্যুতে ভর্তুকি দিচ্ছে।?? অন্যদিকে বিপিডিসি? বলছে, বছরে তাদের ৩? হাজার ৫০০ কোটি টাকা লাভ হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশেষ আইনটি বাতিলের সুপারিশ করে তিনি বলেন, এ আইনের কারণে বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতামূলক উৎপাদনে আসতে পারছে না।
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)