সোহেল রহমান : [১] রাশিয়ার ব্যাংকের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জন্য রাশিয়ান ঋণের বকেয়া সুদ, কমিটমেন্ট ফি ও বিলম্ব জরিমানা সব মিলিয়ে প্রায় ৫৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের দায় নিষ্পত্তির জন্য বিকল্প লেনদেনের উপায় খুঁজছে সরকার। এর মধ্যে ৪৮ কোটি ডলারেরও বেশি সুদ ও কমিটমেন্ট ফি এবং ১০ কোটি ৭০ লাখ ডলার বিলম্ব জরিমানা রয়েছে।
[২] অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি রাশিয়ার পাওনা পরিশোধের বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব এবং ইআরডি’র ইউরোপ উইংয়ের প্রধান উত্তম কুমার কর্মকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠকে বিকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে পাওনা পরিশোধের কোনো পদ্ধতি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
[৩] সূত্র মতে, রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় এ অর্থ পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। দেরিতে পাওনা পরিশোধের কারণে রাশিয়ার আরোপিত ২ দশমিক ৪ শতাংশ জরিমানার পর অর্থ পরিশোধের উপায় খোঁজার প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে।
[৪] সূত্র মতে, আগামী রোববার বা সোমবার রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা করেছে ইআরডি। জরিমানার চাপ এড়ানোর উদ্দেশ্যে রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ কীভাবে তাদের পাওনা অর্থ নেবেÑ অনুষ্ঠেয় বৈঠকে তা জানতে চাইবে ইআরডি।
[৫] পৃথক একটি সূত্র মতে, সরকার ইতোমধ্যে পাওনা আদায়ের পরিবর্তে রাশিয়াকে সমপরিমাণ অর্থ বাংলাদেশের নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বা বাংলাদেশ থেকে পণ্য কেনার বিষয়টি বিবেচনার প্রস্তাব দিয়েছে।
[৬] বকেয়া ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশের এমন বিকল্প প্রস্তাবে রাশিয়া সম্মত হতে পারে বলে আশা করছে সরকার।
[৭] জানা যায়, এদিকে সুদ পরিশোধ ছাড়াও আগামী ২০২৭ সালের মার্চে রাশিয়ান ঋণের প্রথম কিস্তি (আসল) বাবদ ১ হাজার ২৬৫ কোটি ডলার পরিশোধের কথা রয়েছে। প্রস্তাবে মূল ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা ২০২৯ সাল পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
[৮] জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক সময় নিলেও এ-সংক্রান্ত লেনদেন সম্পন্ন করার কোনো উপায় খুঁজে বের করতে পারেনি। রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠকের আগেই ঋণ পরিশোধের কার্যকর বিকল্প খুঁজে বের করতে এবং ইআরডি-কে জানাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পুনঃতাগিদ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।