অর্থনীতি ডেস্ক : [১] সম্প্রতি মহাকাশে একশটিরও বেশি টুকরায় চূর্ণবিচুর্ণ হয়ে যায় রাশিয়ার এক স্যাটেলাইট, যার ফলে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে বাধ্য হন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের নভোচারীরা।
[২] নাসার তথ্য অনুসারে, ২৬ জুন রাতে স্যাটেলাইটের ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করার পর তারা মহাকাশ স্টেশনে থাকা নয় জন নভোচারীকে নিজ নিজ মহাকাশযানে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
[৩] এদিকে, ৬ জুন থেকে মহাকাশ স্টেশনে আটকা পড়ে আছে বোয়িংয়ের স্টারলাইনার রকেট, যেটিতে করে আইএসএস-এ গিয়েছেন নাসার দুই নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর।
[৪] এর আগে মার্চে স্পেসএক্স-এর ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুলে মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছেছিলেন তিন জন মার্কিন নভোচারী ও রাশিয়ার একজন কসমোনট।
[৫] এ ছাড়া, গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার সয়ুজ ক্যাপসুলে করে মহাকাশ স্টেশনে পাড়ি জমিয়েছিলেন রাশিয়ার দুই কসমোনটের পাশাপাশি একজন মার্কিন নভোচারীও। [৬] নাসা বলেছে, এ ঘটনার প্রায় এক ঘণ্টা পর নভোচারীরা নিজ নিজ মহাকাশযান থেকে বেরিয়ে মহাকাশ স্টেশনে নিজেদের স্বাভাবিক কাজ পুনরায় শুরু করেন। [৭] ঠিক কী কারণে রাশিয়ার আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট ধ্বংস হয়েছে, তার কোনো বিস্তারিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। তবে, ২০২২ সালেই এর কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা এসেছিল।
[৮] বিশেষজ্ঞদের ধারণা বলছে, রাশিয়া কোনো স্থলভিত্তিক অ্যান্টি-স্যাটেলাইট ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে স্যাটেলাইটটিতে হামলা করেছে, এমন সম্ভাবনা কম।
[৯] তারা এত বড় একটি স্যাটেলাইটকে অ্যান্টি-স্যাটেলাইট অস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু বানাবে, তা বিশ্বাস করা কঠিন, বলেছেন হার্ভার্ডের জ্যোতির্বিদ জনাথন ম্যাকডাওয়েল।তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোয় রাশিয়ার লোকজনের যে গতিবিধি, কে জানে? এমন হতেও পারে। [১০] ২০২১ সালে এমনি এক ঘটনার জন্য ব্যপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল রাশিয়া, যখন মহাকাশ কক্ষপথে তাদের একটি বিলুপ্ত স্যাটেলাইটে একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। আর সে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপিত হয়েছিল রাশিয়ার নিজস্ব রকেট ঘাটি প্লেসেটস্ক থেকে।
[১১] ওই বিস্ফোরণের উদ্দেশ্য ছিল ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন শুরুর আগে নিজস্ব অস্ত্র ব্যবস্থা পরীক্ষা করা, যার ফলে মহাকাশ কক্ষপথে স্যাটেলাইটের হাজার হাজার টুকরা ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ে। [১২] ম্যাকডাওয়েল ও অন্যান্য বিশ্লেষকদের অনুমান বলছে, এবারের ঘটনায় স্যাটেলাইট ভেঙে পড়ার কারণ ছিল সম্ভবত এর অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, স্যাটেলাইটের অবশিষ্ট জ্বালানিও এমন একটি বিস্ফোরণের কারণ হতে পারে।
[১৩] এর ছড়িয়ে পড়া ধ্বংসাবশেষ ট্র্যাক করছে ইউএস স্পেস কমান্ড। তাদের মতে, এতে এখনও অন্যান্য স্যাটেলাইটে আঘাত হানার মতো ঝুঁকি ধরা পড়েনি। সূত্র : বিডিনিউজ