আমিনুল ইসলাম:[১] ব্যাংক ছাড়া দেশের এক জায়গা থেকে অন্য কোথাও টাকা পাঠাতে সবচেয়ে সহজ ও সাশ্রয়ী উপায় পোস্ট অফিসের ইএমটিএস। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস (ইএমটিএস) এই সুবিধা দেয়। এটি ‘ডিজিটাল মানি অর্ডার’ হিসেবে সুপরিচিত। দেশের যেকোনো পোস্ট অফিস থেকে টাকা পাঠাতে ও তুলতে এ প্রক্রিয়াটি সহজ করা হয়েছে।
[২] ইএমটিএস টাকা পাঠাতে প্রতি হাজারে খরচ হয় পাঁচ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ২৫০ টাকায় পাঠানো যাবে ৫০ হাজার টাকা। ২০১০ সালের ২৬ মার্চ ডাক অধিদপ্তর সেবাটি উদ্বোধনের মাধ্যমে আর্থিক সেবার আধুনিকায়নে বেশ উদ্যোগ নিয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ শেষে ২০১০ সালের ৫ মে সেবাটি চালু হয়।
[৩] সাধারণত আর্থিক অবকাঠামো দুর্বল থাকায় দেশের অনেক জায়গায় ব্যাংক থাকে না। তবে বেশিরভাগ জায়গায় পোস্ট অফিস আছে। গ্রামের মানুষের ভরসা পোস্ট অফিস। ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই এই সেবা নিচ্ছে। বর্তমানে সারা দেশে দ্রুত ও নিরাপদে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা এটি। তবে বিকেল ৫টার পরে টাকা লেনদেন করা যায় না।
[৪] ইএমটিএসকে ‘কম খরচে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা’ হিসেবে উল্লেখ করে ঢাকার কেন্দ্রীয় সার্কেলের অতিরিক্ত পোস্টমাস্টার জেনারেল আল মাহবুব জানান, ইএমটিএস আধুনিক প্রযুক্তি হলেও ‘কেউ চাইলে পাঠানো টাকা আটকে রাখতে বা ফেরত আনতে পারেন। যা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে সম্ভব নয়। তবে শুক্র ও শনিবার পোস্ট অফিস বন্ধ থাকায় এই ব্যবস্থাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি।
[৫] নিরাপত্তার বিষয়ে ঢাকা মহানগর সার্কেলের পোস্টমাস্টার জেনারেল ফরিদ আহমেদ জানিয়েছেন, প্রেরক ও গ্রহীতার জন্য পিন নম্বর থাকে। টাকা লেনদেন পুরোপুরি নিরাপত্তা। লেনদেন নিশ্চিত করতে রসিদও দেওয়া হয়। অভিযোগ থাকলে তৎক্ষণাৎ সমাধান করা হয়। বর্তমানে সারা দেশে দুই হাজার ৭৫২ ডাকঘরে ইএমটিএস সেবা চালু আছে। এছাড়া অ্যাপের মাধ্যমে ইএমটিএস সহজলভ্য করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
[৬] সরকারি তথ্য বলছে, ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ইএমটিএসের মাধ্যমে সাত হাজার ৬৭৭ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। এই সময়ে ডাক অধিদপ্তর আয় করেছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা। ডাক অধিদপ্তরের জন্য বাজেট বাড়ানোর পাশাপাশি আইসিটি অবকাঠামোকে শক্তিশালী করা হলে ইএমটিএস পরিষেবা আরও কার্যকর হয়ে উঠবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।