
তালিকায় নাবিল গ্রুপের ১১টিসহ কয়েকটি কোম্পানি ইসলামী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির তথ্য চেয়ে দুদকের চিঠি
মো. আখতারুজ্জামান : [১] জালিয়াতির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি থেকে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নাবিল গ্রুপের ১১টিসহ বেশ কিছু কোম্পানির তথ্য জানতে চেয়ে ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
[২] সোমবার জানিয়ছেন দুদকের উপপরিচালক মো. ইয়াছির আরাফাত। [৩] চিঠিতে নাবিল গ্রুপের ১১টিসহ কয়েকটি কোম্পানির ঋণের তথ্য চাওয়া হয়েছে। চিঠি প্রাপ্তির সাত কার্যদিবসের মধ্যে তথ্য সরবরাহ করতে বলা হয়েছে দুই ব্যাংককে।
[৪] নাবিল গ্রুপের কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- নাবিল নাবা ফুডস লিমিটেড, নাবিল কোল্ড স্টোরেজ, নাবিল ফিড মিলস লিমিটেড, নাবিল অটো রাইস মিল, নাবিল অটো ফ্লাওয়ার মিল, শিমুল এন্টারপ্রাইজ, নাবা এগ্রো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, আনোয়ারা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, নাবা ফার্মা লিমিটেড, নাবিল গ্রীন ক্রপস লিমিটেড ও ইন্টারন্যাশনাল প্রোডাক্ট প্যালেস। [৫] ইসলামী ব্যাংকের রাজধানীর গুলশান করপোরেট শাখা, নিউমার্কেট শাখা, রাজশাহী ও পাবনা শাখার গ্রাহক নাবিল গ্রুপের এই কোম্পানিগুলোর তথ্য চাওয়া হয়েছে। [৬] এছাড়া চিঠিতে ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের চাকতাই শাখার গ্রাহক মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজ ও সহযোগী প্রতিষ্ঠান, একই জেলার জুবলী রোড শাখার গ্রাহক ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্স ও সহযোগী প্রতিষ্ঠান, খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখার গ্রাহক সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানের তথ্য চেয়েছে দুদক।
[৭] দুদক বলছে, ঋণ জালিয়াতি ঘটনা অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক মো. ইয়াছির আরাফাতের নেতৃত্বে কমিটিতে রয়েছেন আরেক উপপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সহকারী পরিচালক রণজিৎ কুমার কর্মকার।
[৮] চিঠিতে বলা হয়, পর্যাপ্ত নথিপত্র ও জামানত ছাড়াই কোম্পানিগুলোকে ঋণ দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. গোলাম কিবরিয়া চৌধুরীসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ইসলামী ব্যাংকের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
[৯] ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর দৈনিক প্রথম আলোতে ইসলামী ব্যাংকে ভয়ংকর নভেম্বর শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নাবিল গ্রুপের নামে ইসলামী ব্যাংক থেকে ২ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে একটি অসাধু চক্র। আর আটটি প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন উপায়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়ার খবর ছাপা হয় ওই প্রতিবেদনে।
[১০] এরপর ওই বছরই এস আলম গ্রুপ একাই ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে বলে ৩০ নভেম্বর নিউ এজ পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
[১১] ইসলামী ব্যাংক থেকে অসাধু চক্রের কোটি টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরকে ২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর চিঠি দেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ, আবদুল্লাহ সাদিক এবং গ্রাহক শাইখুল ইসলাম ইমরান ও যায়েদ বিন আমজাদ।
[১২] আইনজীবীদের চিঠিতে বলা হয়, গত ২৪ নভেম্বর প্রথম আলো পত্রিকার অনুসন্ধানী রিপোর্টে উঠে এসেছে, ইসলামী ব্যাংক থেকে নভেম্বরে ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা অসাধু চক্র তুলে নিয়েছে। এই ধরনের সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনে আমরা সংক্ষুব্ধ ও উদ্বিগ্ন। তাই তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ করছি।
