সুইজারল্যান্ড থেকে এলএনজি কার্গো আমদানির প্রস্তাব ওঠছে ক্রয় কমিটিতে
সোহেল রহমান : [১] দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে আরও এক কার্গো (৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ) এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এটি হবে চলতি পঞ্জিকা বছরের ২৩তম এলএনজি কার্গো আমদানি। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে সুইজারল্যান্ড-এর টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড এই এলএনজি কার্গো সরবরাহ করবে। প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম ১২.৫০ ডলার হিসাবে কার্গোটি আমদানিতে ব্যয় হবে ৫৮৩ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
[২] প্রসঙ্গত: গত ৩ জুলাই অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির বৈঠকে চলতি পঞ্জিকা বছরের ২২তম এলএনজি কার্গো আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সিলারেট এনার্জি এলপি থেকে ওই কার্গোটি আমদানির চুক্তি করা হয়েছে। প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম ১৩.৫৫৮ ডলার হিসাবে ২২তম কার্গোটি আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০৯ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। সে হিসাবে এবারের কার্গো আমদানিতে প্রায় ২৫ টাকার অধিক সাশ্রয় হবে সরকারের।
[৩] জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ, শিল্প ও বাণিজ্যিক যাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে চলতি জুলাইয়ে স্পট মার্কেট থেকে দুই কার্গো এলএনজি ক্রয় করা প্রয়োজন। এরই অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড (আরপিজিসিএল)। স্পট মার্কেট থেকে জুলাই মাসের জন্য এলএনজি ক্রয়ের লক্ষ্যে মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) সইকারী ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছে দর প্রস্তাব আহ্বান করে ই-মেইল পাঠানো হয়। নির্ধারিত সময়ের (২৮ জুন) মধ্যে মেটি ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে মনোনীত হয়েছে সুইজারল্যান্ড-এর টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড। [৪] সূত্র জানায়, দরপত্রে অংশ নেয়া অপর দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড-এর প্রস্তাবিত দর ছিল প্রতি ইউনিট .১৩.৪৮ ডলার এবং গানভর সিঙ্গাপুর লিমিটেড-এর প্রস্তাবিত দর ছিল প্রতি ইউনিট ১৫.১৫ ডলার।
[৫] জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ, শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে গত কয়েক বছর ধরে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে চুক্তির পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি (লিকুইডিফাইড ন্যাচারাল গ্যাস) কার্গো আমদানি করছে সরকার। এ ধারাবাহিকতায় স্পট মার্কেট থেকে চলতি বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে বত্রিশ কার্গো এলএনজি ক্রয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী (প্রধানমন্ত্রী) নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন।
[৬] সূত্র জানায়, দেশের বিদ্যমান ও ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটাতে কক্সবাজারের মহেশখালীতে দৈনিক ৫০০ এমএমসিএফ এবং দৈনিক ৬০০ এমএমসিএফ ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। এ টার্মিনাল দু’টির মাধ্যমে জি-টু-জি ভিত্তিতে পেট্রোবাংলার সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় কাতারগ্যাস থেকে ১৫ বছর মেয়াদে বর্তমানে ২.৫ এমটিপিএল এবং ওমান থেকে ১০ বছর মেয়াদে বর্তমানে ১.০ এমটিপিএল মোট ৩.৫ এমটিপিএল এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে।