• প্রচ্ছদ
  • আমার দেশ
  • আমাদের বিশ্ব
  • খেলা
  • ইসলামি চিন্তা
  • অমৃত কথা
  • বিনোদন
  • আজকের পএিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
  • নগর সংস্করণ
  • মিনি কলাম
  • খ্রিস্টীয় দর্পণ
  • প্রবারণা পূর্ণিমা

মিনি কলাম

বৈষম্য বিলুপ্ত করতে হলে শ্রেণিবৈষম্যমূলক ব্যবস্থাকে বদলে দিতে হবে

প্রকাশের সময় : July 11, 2024, 12:06 pm

আপডেট সময় : July 11, 2024 at 12:06 pm

আজিজুর রহমান আসাদ

বর্তমান দুনিয়ায় অনাহারে প্রতিদিন ২৫০০০ হাজার মানুষের মৃত্যু, লক্ষ লক্ষ মানুষের গৃহহীন ফুটপাথ বেঁচে থাকার অসহনীয় জীবন, কোটি কোটি তরুণ বেকারের অনিশ্চয়তা ও হতাশায় ভরা দিনযাপন, লক্ষ্য কোটি নারীর গৃহে ও কর্মস্থলে বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার, সামাজিক বাস্তবতা। অক্সফামের রিপোর্ট অনুসারে (ফেব্রুয়ারি ২০২৪) এই অসহনীয় দারিদ্র্য ও বৈষম্য বাড়ছে। এখন ৬০ শতাংশ জনগণ, প্রায় ৫ বিলিয়ন মানুষ দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রের মধ্যে বাস করছে। দারিদ্র্য, বৈষম্য ও সহিংসতার বিপরীতে আরেকটি চিত্র আছে। এই বছর (২০২৪),এপ্রিল পর্যন্ত ফিলদি রিচ বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা মাত্র ২৭৮১ জন। এদের হাতে দুনিয়ার সকল সম্পদের অর্ধেকেরও বেশি। মাত্র ১.১ শতাংশ মানুষের ব্যক্তি মালিকানায় দুনিয়ার অর্ধেক সম্পদ।

আজকের পুঁজিবাদী সমাজটি শ্রেণিবৈষম্য মূলক। এই শ্রেণি বৈষম্য মানে, শুধু সম্পদের বৈষম্য না, ক্ষমতার বৈষম্যও। সামরিক ও সাংস্কৃতিক দুই ধরনের ক্ষমতার, যার মধ্যদিয়ে এই বৈষম্য টিকিয়ে রাখা ও পুনরুৎপাদন করা হয়। দারিদ্র একটি শ্রেণি অবস্থান, হতে পারে তা বিত্তহীন শ্রেণির চরম দারিদ্র্য, কিংবা মধ্যবিত্তের রিলেটিভ দারিদ্র্য। দারিদ্র্য বা বৈষম্য তৈরি হয় বঞ্চনা থেকে। বিত্তহীন বা নিম্নবিত্ত শ্রেণিতে জন্ম নেওয়ার কারণে শিক্ষা থেকে বঞ্চনার ফলে উচ্চ বেতনের চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চনা, ফলে সম্পদের মালকানা থেকে বঞ্চনা, ফলে যথেষ্ট পুঁজি অর্জন ও তা বিনিয়োগ সুযোগ থেকে বঞ্চনা। বিত্তহীন হলে উচ্চবিত্ত শ্রেণির সাথে পারস্পরিক সহায়তা থেকেও বঞ্চনা।

পুঁজিবাদে মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটি খুব ক্ষুদ্র অংশ কিছু সুযোগ পায়, মেধাবী, চালাক, বা দুর্নীতিবাজ হলে। এরা পুঁজি হাতে পেলে, রাষ্ট্রযন্ত্রের কর্মচারী হলে, এদের শ্রেণি উত্তরণ ঘটে, বিত্তবান ও ক্ষমতা-শ্রেণিতে। এরা তখন এই বৈষম্যের ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করে। একটি কাজ বিত্তহীন ও মধ্যবিত্তের মগজ ধোলাইয়ের। মগজ ধোলাইয়ের প্রথম কাজটি বৈষম্যের ধারণা গুলিয়ে দেওয়া, বৈষম্যের ব্যবস্থা আড়াল করা, কখনো তা ধর্মের নামে ভাগ্যবাদী বিশ্বাস প্রচার করে। কখনো তা বর্ণবাদ, জাতীয়তাবাদ, মেধাবীদের প্রতিযোগিতা, ইত্যাদি ভাবাদর্শ প্রচার করে। বৈষম্যের ধারনা কিভাবে গুলিয়ে দেয়?

একটি উদহারণ পার্বত্য অঞ্চলে বাঙালিদের সম-অধিকার আন্দোলন। আরেকটি উদহারণ বতমানে চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলন। পাহাড়ি আদিবাসীদের প্রথমে বলা হলো, তোরা সব বাঙালি হয়ে যা। অজ্ঞতায় হোক বা নাইভিটিতে হোক, ভুলে যাওয়া হল, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি আলাদা, স্বশাসন ব্যবস্থা আলাদা, ভূমি মালিকানা ও প্রকৃতির সাথে সম্পর্ক, সবকিছুই শঙ্কর জাতি বাঙালির থেকে আলাদা। এরা সংখ্যায় কম। এরা বাঙালি হয়ে গেলে এদের অস্তিত্ব হারিয়ে যাবে। এরপর এক বাঙালি সামরিক শাসক এসে পার্বত্য আদিবাসীদের সংখ্যালঘুকরণ শুরু করে দরিদ্র বাঙালিদের সামরিক ক্যাম্পের পাশে জমিদান করে। এরপর শুরু হয় সুবিন্যস্ত সামরিকায়ন ও ইসলামিকরণ, আদিবাসী সংস্কৃতি ধ্বংস করার।

এখন সেটেলার বাঙালিরা আদিবাসী ভূমির উপর সম-অধিকার চায়। পুঁজিবাদ ও রাষ্ট্র উস্কে দিচ্ছে আদিবাসী অর্থনীতি, বাজার ও সম্পদ দখলের জন্য, আরেক দরিদ্র বাঙালিকে, সম-অধিকারের নামে সহিংস প্রতিযোগিতায়। জোড় করে কারো বাড়িতে গিয়ে, তাঁর সম্পত্তির সম-অধিকার যে আসলে আদিবাসীদের প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতা এই বাস্তবতা আড়াল হয় সম-অধিকারের স্লোগানে। কোটার প্রশ্ন কেন? কারণ শ্রেণি বৈষম্যের বাস্তবতা আছে। এই বৈষম্য পুঁজিবাদী ব্যবস্থার। এই ব্যবস্থাকে প্রশ্ন করার বদলে, কোটা বাতিলের দাবি, যা বৈষম্যের নামে, তা আসল বৈষম্যকে আড়াল করার একটি রাজনীতি। খবধাব ঘড় ঙহব ইবযরহফ হচ্ছে বৈষম্য থেকে মুক্তির একটি বৈশ্বিক স্লোগান।

এটি কীভাবে সম্ভব? এদের একটি নিদান কোটা ব্যবস্থা। যারা পিছিয়ে আছে, শ্রেণি অবস্থানের কারণে, তাঁদের সহযোগিতা করা। এই সহায়তার একটি নাম দেওয়া হয়েছিল পজিটিভ ডিস্ক্রিমিনেশন। আপনি যদি আসলেই বৈষম্য বিলোপ করতে চান, আপনাকে বৈষম্যের যে মূল কারণ, পুঁজিবাদী ব্যবস্থা সেটিকে বুঝতে হবে। বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার বিপরীতে সাম্যের ব্যবস্থার রূপকল্প জানতে হবে। সেজন্য সমাজবদলের বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক কাজে অংশ নিতে হবে। বৈষম্য বিলুপ্ত করতে হলে শ্রেণি বৈষম্যমূলক ব্যবস্থাটিকে বদলে দিতে হবে, একটি সাম্যের ব্যবস্থায়। যেখানে কয়েকজন মেধাবী বা কোটাধারী নয়, সকলেই সমান সুযোগ পাবে, সুষম বণ্টন ব্যবস্থায়, সম্পদের সামাজিক মালিকানার।
লেখক: গবেষক

সম্পাদক

নাসিমা খান মন্টি

09617175101, 01708156820

[email protected]

১৩২৭, তেজগাঁও শিল্প এলাকা (তৃতীয় তলা) ঢাকা ১২০৮, বাংলাদেশ। ( প্রগতির মোড় থেকে উত্তর দিকে)