• প্রচ্ছদ
  • আমার দেশ
  • আমাদের বিশ্ব
  • খেলা
  • ইসলামি চিন্তা
  • অমৃত কথা
  • বিনোদন
  • আজকের পএিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
  • নগর সংস্করণ
  • মিনি কলাম
  • খ্রিস্টীয় দর্পণ
  • প্রবারণা পূর্ণিমা

আমার দেশ

উৎপাদন ঘাটতিতে আকাশচুম্বী আলুর দাম

প্রকাশের সময় : July 11, 2024, 12:13 pm

আপডেট সময় : July 11, 2024 at 12:13 pm

অর্থনীতি ডেস্ক : [১] বছর দুয়েক আগেও কম দামের কারণে উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা আলু বিক্রি করে হতাশ হয়েছিলেন। আর এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো। আলুর দাম বর্তমানে বাজারের মোটা ও মাঝারি মানের চালের দামকেও ছাড়িয়ে গেছে। [২] আলুর উৎপাদন এবার উল্লেখযোগ্যভাবে কম হওয়ায় দাম বেড়েছে বলে দাবি কৃষি মন্ত্রণালয়ের। ফলে আলু আমদানি করা হলেও উৎপাদন ঘাটতির কারণে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। [৩] কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, আর মাত্র চার মাস খাওয়ার মত আলুর মজুদ রয়েছে দেশে, যা চলবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই পরিস্থিতিতে আমদানি করেও আলুর বাজার সামাল দিতে পারছে না সরকার। [৪] আলু বর্তমানে প্রতিকেজি ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা সাম্প্রতিক সর্বোচ্চ ৭০ টাকা কেজি থেকে কিছুটা কমেছে। আগামী মাসে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো। [৫] দেশে আগে কোল্ড স্টোরেজ সুবিধার মাধ্যমে সারাবছরই আলু সরবরাহ স্থিতিশীল ছিল উৎপাদনও ছিল চাহিদার চেয়ে বেশি। এমনকি, অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে আলু রপ্তানিও করা হচ্ছিল। তবে এ বছর রপ্তানির পরিকল্পনায় ভাটা পড়েছে। [৬] এদিকে, সরকার অনুমতি দিলেও আলু আমদানির পরিমাণ সে হিসেবে কম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ৫ লাখ ৮৩ হাজার ৭১ মেট্রিক টন আলু আমদানির অনুমতির বিপরীতে দেশে এসেছে মাত্র ৯৭,২২০ মেট্রিক টন আলু। [৭] দেশে প্রতিমাসে আলুর চাহিদা প্রায় ৬ লাখ টন। বাংলাদেশে আলু আমদানির অন্যতম উৎস ভারতে আলুর চড়া দামের কারণে আমদানি ধীরগতিতে হচ্ছে বলে মত সংশ্লিষ্টদের।
[৮] এছাড়া, বছরের শুরুতে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম এবং মিধিলির কারণে সৃষ্ট ভারী বৃষ্টিপাতেও আলুর উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটিও আলু সংকটের আরেকটি কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
[৯] জানা যায়, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আলু উৎপাদনকারী জেলা মুন্সিগঞ্জে অতি বৃষ্টির কারণে দুইবার মাটিতে রোপন করার পর আলু বীজ পচে যায়। মিগজাউম ও মিধিলির প্রভাবে তৈরি হওয়া অতিবৃষ্টিতে এই ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে, মৌসুমের আগে থেকেই দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় সারাদেশের অনেক কৃষকই অপরিণত আলু তুলে বিক্রি করে দেন। ফলে সামগ্রিকভাবেই আলুর উৎপাদন কম হয়েছে। [১০] কোল্ড স্টোরেজ মালিকদের দাবি, এ বছর আলু উৎপাদন ৭০ লাখ টনের বেশি হয়নি— যা বছরে আলুর আনুমানিক চাহিদা ৯০ লাখ টনের চেয়ে অনেকটাই কম। [১১] যদিও কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, চূড়ান্ত হিসেবে আগে জানা গেছে, আলুর উৎপাদন হবে ১ কোটি ১ লাখ টনের মত। গত বছর যা ছিল ১ কোটি ৪ লাখ টন। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও বাস্তব চিত্রে গরমিল আছে।
[১২] আলু চাষ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা ভুট্টা ও সরিষার মতো অন্যান্য ফসল চাষে সরকারী প্রণোদনার পাশাপাশি অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতকেও দায়ী করেছেন। তাদের মতে, কৃষকরা অন্য ফসল চাষে প্রণোদনা পাওয়ায় আলু চাষ বাদ দিয়ে ওইসব ফসলের দিকেই ঝুঁকেছেন– যা সরকারী পরিসংখ্যানে প্রতিফলিত হয়নি।
[১৩] কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু জানান, এ বছর সারাদেশে কোল্ড স্টোরেজগুলোতে ২৫-৩০ শতাংশ আলু রাখার জায়গা খালি ছিল। এবং অনেক আগে থেকেই আলু স্টোরেজ থেকে বাজারে দিতে হচ্ছে।
[১৪] তিনি বলেন, এবারে কোল্ড স্টোরেজে আলু রাখা হয়েছে ২৫-৩৫ টাকায়, যেটা আগে থাকতো ১১-১২ টাকায়। বেশির ভাগ আলু চাষীরা নিজেরাই রেখেছেন এবং সেগুলো স্টোরেজ গেটে প্রতি কেজি ৪৫-৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে কৃষকরাও ভালো দাম পাচ্ছেন।
[১৫] এদিকে, গত ১২ জুন খাদ্য, বাণিজ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে আলু উৎপাদনে ঘাটতি নিয়ে অনুষ্ঠিত সভার কার্যবিবরণী পাঠিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। যার একটি একটি অনুলিপি পেয়েছে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
[১৬] গত ২৭ মে এই চার মন্ত্রণালয়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আলু আমদানির খরচ কমাতে আমদানির ওপর থাকা মোট ৩৩ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত থাকলেও সেটি এখনো করেনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এই সিদ্ধান্তটি হয়েছিল গতমাসে।
[১৭] এদিকে, গত ২৭ জুন তারিখে বাণিজ্য সচিব মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, তিনি আমদানি শুল্ক কমানোর কোনো পদক্ষেপের বিষয়ে অবগত নন।
[১৮] অন্যদিকে, সভায় উপস্থিত কৃষি সমন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, এ বছর আলুর উৎপাদন কম হওয়ার কারণে মূল্য বেড়েছে। বর্তমানে কোল্ড স্টোরেজ ও কৃষক পর্যায়ে যে পরিমাণ আলু রয়েছে, তা দিয়ে চার মাস পর্যন্ত চাহিদা মেটানো যাবে।
[১৯] এ বছর চাহিদা মেটাতে অতিরিক্ত আলু আমদানির প্রয়োজন হতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি। জানা যায়, নতুন মৌসুম শুরু হয়ে আলু উঠতে অন্তত আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। যদিও ডিসেম্বর-জানুায়ারিতে যে আগাম আলু পাওয়া যায়, সেটির দামও বেশি থাকে।
[২০] এদিকে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, আলুর দাম অনেক বেশি। দ্রুত শুল্ক প্রত্যাহার করে আমদানি করতে হবে।
[২১] এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের উৎপাদনের তথ্যে গরমিল আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ব্যাপক আলোচনা সত্ত্বেও, সরকার আমদানি শুল্ক কমাতে বা কার্যকরভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণে এখনও কোনো সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
[২২] জানা যায়, গত সেপ্টেম্বরে আলু উৎপাদন খরচ কেজিপ্রতি ১১ টাকায় পৌঁছেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতিকেজি আলুর দাম ৩৫-৩৬ টাকা নির্ধারণ করে। এই বছর, উৎপাদন খরচ আঞ্চলভেদে ১৯ টাকা পর্যন্ত হয়েছে।
[২৩] বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় শুল্ক শূন্য করে বড় মজুদ এনে স্টক তৈরির আলোচনা হলেও সে বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
[২৪] সে সময় ভারতে আলুর দাম কম ছিল, যেটা এখন বেড়ে ৩৫ রুপির মতো দামে বিক্রি হচ্ছে। এটি ৩৩ শতাংশ শুল্ক দিয়ে দেশে আসলে দাম হবে ৭০ টাকার মতো।
[২৫] এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলুর উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৪ লাখ মেট্রিক টন— যা ২০২০-২১ সালে ছিল ১ কোটি ১ লাখ টন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এ বছর আলুর উৎপাদন ১ কোটি ১ লাখ টন হবে। তবে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হলে এটি হয়তো ৯৭-৯৮ লাখ টনে দাঁড়াবে।
[২৬] যদিও মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আলুর উৎপাদন নিয়ে কোনো সংকট নেই। যেটুকু আছে সেটা ব্যবস্থাপনার। এই ব্যবস্থাপনা ঠিক করতে পারলে বাজারে সমস্যা থাকবে না। সূত্র : টিবিএস

সম্পাদক

নাসিমা খান মন্টি

09617175101, 01708156820

[email protected]

১৩২৭, তেজগাঁও শিল্প এলাকা (তৃতীয় তলা) ঢাকা ১২০৮, বাংলাদেশ। ( প্রগতির মোড় থেকে উত্তর দিকে)