মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : [১] জেলা শহরের একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা শিশু পার্কটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে খেলাধুলা ও বিনোদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা। [২] গতকাল শুক্রবার দেখা যায়, পার্কের ইলেকট্রিক ট্রেনটি চলাচল না করায় মরিচা ধরে গেছে। পার্কের দোলনা ও স্লিপার নষ্ট হয়ে গেছে। ডাইনোসর, বাঘ, ভাল্লুকসহ প্রায় সব ভাস্কর্যের সৌন্দর্য হারিয়েছে। এছাড়া পার্কের পুরো এলাকা ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে।
[৩] কালেক্টরেট ভবনের সামনে প্রায় এক একর জমির ওপর ২০০৭ সালে নির্মিত হয় এই পার্কটি। তবে জেলা বাসীর দাবির মুখে এর নাম রাখা হয় মুক্তিযোদ্ধা শিশু পার্ক। ২০১৭ সালের দিকে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ শিশু পার্কের উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। পরে বৈদ্যুতিক ট্রেন, স্লিপার, দোলনা, বসার জন্য ছাউনি, বেঞ্চ, বাঘ, ভালুক, জিরাফ, হরিণসহ মোট ১৪টি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। [৪] পার্কটি কিছু দিন সুশৃঙ্খলভাবে চললেও এখন তা অবহেলায় পড়ে রয়েছে। সঠিক তত্ত্বাবধানের অভাবে বেশ কয়েকটি বড় বড় রাইড মাটিতে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পার্কের ভেতরে ঝোপঝাড়ে ভরে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে পৌর এলাকার কিছু অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে পার্কে এলেও সাপসহ অন্যান্য পোকামাকড়ের ভয়ে থাকেন। এছাড়া পার্কের একটি অংশ দখল করে ভেন্ডাররা স্ট্যাম্প বিক্রি করছেন। এছাড়া চায়ের দোকানসহ অন্য দোকান বসেছে পার্কের পাশে। [৫] জজ কোর্টের আইনজীবী রকিবুল হাসান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা শিশু পার্কটি অযত্ন অবহেলায় পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। দ্রুত এটিকে সংস্কার করে পূর্বের ন্যায় ফিরিয়ে আনলে শিশুরা এখানে খেলাধুলা করতে পারবে। [৬] হোসেন ইকবাল নামের একজন বলেন, প্রথম যখন এই শিশু পার্কটি নির্মিত হল তখন পৌর এলাকার আশেপাশের অনেকেই তাদের বাচ্চাদের নিয়ে এখানে আসতো। দিন দিন অযত্ন অবহেলায় শিশু পার্কের বিভিন্ন রাইড গুলো নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। আরও একটি বিষয় হল বিকেল থেকেই নেশাগ্রস্ত লোকজন পার্কের ঝোপঝাড়ের ভেতর বসে থাকে। এতে অভিভাবকরা ভয় থাকে। অতি দ্রুত সময়ের ভেতর সংস্কার করে শিশুদের খেলাধুলার সরঞ্জামাদি সচল করা হোক এটাই আমাদের সবার দাবি।
[৭] সুজনের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস বলেন, প্রতিটি শিশুর লেখাপড়ার পাশাপাশি, মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার প্রয়োজন রয়েছে। জেলা শহরের একটিমাত্র শিশুদের খেলার জায়গা মুক্তিযোদ্ধা শিশু পার্ক, একটি দীর্ঘদিন ধরেই অযথা অবহেলায় ও সঠিক তত্ত্বাবধানে অভাবে বিলীনের পথে। কর্তৃপক্ষ এটিকে দ্রুত সংস্কার করে শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য উন্মুক্ত করে দেবে এমনটাই প্রত্যাশা জেলাবাসীর। মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. রমজান আলী বলেন, যত দ্রুত সম্ভব মুক্তিযোদ্ধা শিশু পার্কটিকে সংস্কার করে পূর্বের ন্যায় আমরা নিয়ে আসবো।