আমিনুল ইসলাম : [১] সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন ২০১৮ সালের মতোই ধীরে ধীরে বড় আকার ধারণ করছে। দিন দিন উপস্থিতি বাড়ছে কর্মসূচিতে। সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলন বন্ধ করতে বারবার বলা হলেও তা গায়ে মাখছেন না বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বরং সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডেকে দাবি মেনে নিতে পাল্টা চাপ প্রয়োগ করতে চান আন্দোলনকারীরা। এজন্য আন্দোলন আরও জোরালো করার ইঙ্গিত দিয়েছেন শীর্ষ তিন সমন্বয়ক।
[২] বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারে এই আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে। আন্দোলন পরিচালনা করতে দেশব্যাপী ৬৫ জনের সমন্বয়ক কমিটি করা হয়েছে। আন্দোলনের মূল নেতৃত্ব দিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আর সেখানে তিনজনের নাম মোটাদাগে উঠে আসছে। তারা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের নাহিদ ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের হাসনাত আব্দুল্লাহ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সারজিস আলম। তিনজনই ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
[৩] তবে ছাত্রলীগ বারবারের মতো অভিযোগ করে আসছে আন্দোলনকারীরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে আন্দোলন করছে। সরকারের পক্ষ থেকেও সেই অভিযোগ তোলা হচ্ছে। কোটা আন্দোলনকারীদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি না তা স্পষ্ট না হলেও এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
[৪] সম্প্রতি গঠিত রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি বা ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্ট ফোর্সের (ডিএসএফ) সদস্য সচিব নাহিদ ইসলাম। তিনি রয়েছেন আন্দোলনের সামনের সারিতে। কর্মসূচিগুলো ঘোষণা করেন তিনি। এছাড়া একই দলের রিফাত রশিদ, আবু বাকের মজুমদারসহ আরও বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আন্দোলনকে পরিচালনা করছেন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে। এ অর্থে এটি পরিষ্কার যে, কোটা আন্দোলনে ছাত্রশক্তির ব্যাপক সম্পৃক্ততা রয়েছে।
[৫] কোটা আন্দোলন নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরতে গিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, তখন (২০১৮ সালে) আমাদের জন্য এটি ভীষণ কঠিন ছিল। হলে হলে গিয়ে জনসমর্থন আদায় করতে হয়েছে। তারপর বৃহৎ আন্দোলন করা গেছে। এবার এটা নিয়ে তেমন কষ্ট করতে হয়নি। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছে। কোটা কেন অযৌক্তিক তা সবাইই বোঝেন। তাই অনেকেই ভাবতে পারেন যে, এতে হয়ত ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষ কোনো শক্তির সম্পৃক্ততা রয়েছে। কিন্তু আসলে তা নয়।
[৬] কোটা আন্দোলন নিয়ে ছাত্রলীগের ব্যাখ্যা এবং ব্যাপক আকারে ছাত্রশক্তির নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততা নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, দেখুন, আমরা একটি ক্যাম্পাসভিত্তিক মধ্যমপন্থী দল। ছাত্রদের সমস্যা, ছাত্রদের আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা কাজ করি। কোটা আন্দোলন ছাত্রদের একটি সমস্যা। ছাত্রদের প্রাণের দাবি। সুতরাং এই প্রাণের দাবিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র-শক্তি বসে থাকবে- এটি হতে পারে না। ছাত্রদের যেকোনো আন্দোলনে ক্রান্তিকালে ছাত্রশক্তি থাকবে। এটি আর পাঁচটি সংগঠনের ক্ষেত্রেও একই।