
আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় কোটার প্রয়োজন আছে : কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক : [১] দেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় কোটার প্রয়োজন আছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
[২] গতকাল শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। [৩] কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবি ও অনেক বক্তব্য সংবিধানের এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আন্দোলন সংবিধানের বিরুদ্ধে বা আদালতের বিরুদ্ধে যাওয়ায় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। [৪] সংবিধানের আলোকেই কেবল রাষ্ট্র পরিচালনা হয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কিত সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সব নাগরিকের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে রাষ্ট্র। সেখানে আরও বলা হয়েছে, মানুষের সামাজিক-অর্থনৈতিক অসাম্য নিরোধের জন্য নাগরিকদের মধ্যে সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। [৫] জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অথচ গত কয়েক বছরে সরকারি চাকরিতে মেয়েদের অন্তর্ভুক্তি হতাশাজনকভাবে কমেছে। কোটা না থাকায় পুলিশে মাত্র চার জন নারী অফিসার সুযোগ পেয়েছে, ফরেন সার্ভিসে সুযোগ পেয়েছেন মাত্র দুজন। ৫০টি জেলার নারীরা ক্যাডার সার্ভিসে যোগ দেওয়ার সুযোগ পায়নি। ২৩টি জেলায় একজনও পুলিশে চাকরি পায়নি। [৬] আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংবিধানের উল্লিখিত বিধানের উদ্দেশ্য হচ্ছে, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিসহ সব খাতে সবাই যেন সমানভাগে সুযোগ পায়। সেজন্যই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। [৭] তিনি বলেন, বিসিএস নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে মেধা তালিকায় নিয়োগ পায় ৭০ শতাংশের মতো। ৩৩, ৩৪, ৩৫তম বিসিএসে ৭২ শতাংশ প্রার্থীকে মেধার ভিক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যেখানে কোটায় নিয়োগ পেয়েছে ২৮ শতাংশ। শূন্য পদগুলোতে মেধা তালিকা থেকে নেওয়া হয়েছে। কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে যেখানে মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হচ্ছে, সেখানে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই।
[৮] দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই কোটার ভিক্তিতে সবচেয়ে কম নিয়োগ দেওয়া হয় জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমানে ভারতে ৬০ শতাংশ, পাকিস্তানে ৯২.৫ শতাংশ, নেপালে ৪৫ শতাংশ এবং শ্রীলংকার ৫০ শতাংশ কোটায় নিয়োগ দেওয়া হয়। এই পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, আমাদের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় কোটার প্রয়োজন রয়েছে। বিদ্যমান অন্তর্ভুক্তি এটা যৌক্তিক।
[৯] শিক্ষার্থীদের পুঁজি করে একটি কুচক্রী মহল রাষ্ট্রকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র করছে— এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই অশুভ শক্তি এর আগেও… আমাদের কাছে তথ্য আছে। ২০১৮ সালে যখন কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়, তখন রাজনৈতিকভাবে পরাজিত এই অশুভ শক্তি এই আন্দোলনের ওপর ভর করেছিল। নিরাপদ সড়কের আন্দোলনেও ভর করে রাজনৈতিক রূপ নেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। তখন এই অশুভ শক্তির হাতে আমাদের ধানমন্ডি পার্টি অফিসও আক্রান্ত হয়েছে।
[১০] কোটাবিরোধী আন্দোলন সংবিধানের বিরুদ্ধে বা আদালতের বিরুদ্ধে যাওয়ায় আওয়ামী লীগ কোনও ব্যবস্থা নেবে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
