ট্রেজারি বন্ড ও বিলসহ সাতটি খাতে সর্বজনীন পেনশন তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ করা যাবে
সোহেল রহমান : [১] সর্বজনীন পেনশন তহবিলের অর্থ বিনিয়োগে ট্রেজারি বন্ড, ট্রেজারি বিল ও সরকারি অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পসহ সাতটি খাত চিহ্নিত করেছে সরকার। এছাড়া সর্বজনীন পেনশন তহবিলের অর্থ কোনক্রমেই ব্যক্তি মালিকানাধীন কোন প্রতিষ্ঠানে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের বাইরে বিনিয়োগ করা যাবে না। একই সঙ্গে কোন একক খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ তহবিলের মোট অর্থের ২৫ শতাংশের বেশি হবে না। তবে কোন সরকারি সিকিউরিটি-তে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এ শর্ত প্রযোজ্য হবে না।
[২] সর্বজনীন পেনশন তহবিল (বিনিয়োগ ও সংরক্ষণ) বিধিমালা ২০২৪-এ এসব বিধান রাখা হয়েছে। বিধিমালাটি অতি সম্প্রতি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
[৩] বিধিমালায় বলা হয়েছেÑ সর্বজনীন পেনশন তহবিলের অর্থ সুকুকসহ অন্যান্য সরকারি সিকিউরিটি; বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক অনুমোদিত বা নিয়ন্ত্রিত মিউচ্যুয়াল ফান্ড; বিএসইসি কর্তৃক অনুমোদিত ও স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ‘এ’ ক্যাটাগরির বন্ড; সরকার বা সরকারি কোন সংস্থা কর্তৃক অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য গৃহীত বাস্তবায়নাধীন বা বাস্তবায়িত কোন প্রকল্প বা প্রকল্পের সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ এবং কোন তফসিলি ব্যাংকে স্থায়ী আমানত হিসেবে রাখা যাবে। [৪] তফসিলি ব্যাংকের বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়েছেÑ বাংলাদেশে অনুমোদিত রেটিং সংস্থা বা স্বীকৃত কোন আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক দীর্ঘ মেয়াদে অন্যূন ‘এএ’ এবং স্বল্প মেয়াদে অন্যূন ‘এসটি-১’ বা সমমান রেটিং সম্পন্ন কোনো তফসিলি ব্যাংকে স্থায়ী আমানত রাখা যাবে। তবে কোন তফসিলি ব্যাংককে একাধিক রেটিং সংস্থা কর্তৃক ভিন্ন ভিন্ন রেটিং প্রদান করা হলে সেক্ষেত্রে নিম্নতম রেটিংকে প্রকৃত রেটিং হিসাবে গণ্য করতে হবে।
[৫] বিধিমালায় বলা হয়েছে, সর্বজনীন পেনশন তহবিলের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সর্বজনীন পেনশন তহবিল ব্যবস্থাপনা কমিটি নামে ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হবে। দেশের আর্থিক বাজার ও পুঁজিবাজারসহ বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রসমূহ পর্যালোচনা-পূর্বক কম ঝুঁকিপূর্ণ ও অধিক লাভজনক পোর্টফোলিও বা খাতে বিনিয়োগের জন্য কমিটি সুপারিশ প্রদান করবে। যথাসম্ভব পরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও সুশাসন নিশ্চিত করে বিনিয়োগের খাতসমূহ নিরূপণ করতে হবে এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কমিটি সর্বোচ্চ ডিউ ডিলিজেন্স প্রয়োগ করে সুপারিশ প্রদান করবে। তহবিল ব্যবস্থাপনা কমিটির সুপারিশসমূহ পর্যালোচনাপূর্বক ‘জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ’ তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
[৬] এছাড়া সর্বজনীন পেনশন তহবিলের ব্যবসা উন্নয়ন ও তহবিলের অনুকূলে সম্পদ আহরণ, বিনিয়োগযোগ্য অর্থের পরিমাণ নিরূপণ ও তহবিলের পুঞ্জিভূত অর্থের হিসাব পর্যালোচনা-পূর্বক কমিটি পেনশন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দেবে। বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণের লক্ষ্যে কহবিল ব্যবস্থাপনা কমিটি যে কোন ব্যক্তিকে কমিটির সভায় আমন্ত্রণ জানাতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে যে, আমন্ত্রিত ব্যক্তি সভায় নিজস্ব বক্তব্য দিতে পারবেন, কিন্তু তার ভোট প্রদানের কোন ক্ষমতা থাকবে না।
[৭] তহবিলের ব্যাংক হিসাব-এর বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়েছে, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতায় ঘোষিত স্কিমসমূহহের নামে এক বা একাধিত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে পৃথক পৃথক ব্যাংক হিসাব খোলা যাবে। এছাড়া স্কিমের সুবিধার্থে বাংলাদেশে অনুমোদিত রেটিং সংস্থা বা স্বীকৃত কোন আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক দীর্ঘ মেয়াদে অন্যূন ‘এএ’ এবং স্বল্প মেয়াদে অন্যূন ‘এসটি-১’ বা সমমান রেটিং সম্পন্ন অন্য কোন তফসিলি ব্যাংকেও অনুরূপ ব্যাংক হিসাব খোলা যাবে। তবে কোন তফসিলি ব্যাংককে একাধিক রেটিং সংস্থা কর্তৃক ভিন্ন ভিন্ন রেটিং প্রদান করা হলে সেক্ষেত্রে নিম্নতম রেটিংকে প্রকৃত রেটিং হিসাবে গণ্য করতে হবে।