শাহীন খন্দকার : [১] দূর্বৃত্তদের হামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অধীদপ্তরের কার্যালয়ে থাকা গাড়ি ভাঙচুর করে ও আগুন লাগিয়ে দেয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্রে আরও জানা গেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হামলার ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি করা হয়েছে।
[২] সেইসঙ্গে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজধানীর মুগদা হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ভেঙ্গে ফেলার পাশাপাশি আগুন দেওয়া হয় অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অ্যাম্বুলেন্সে।
[৩] অন্যদিকে গতকাল বুধবার রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের উপ-পরিচালক সহকারী অধ্যাপক ডা. কাজল কুমার কর্মকার বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও কারফিউ চলাকালীন সময়ে চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্টাফরা টানা ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করেছে।
[৪] তিনি বলেন, চিকিৎসকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছে এবং সবাই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগী ১ হাজার ১৩৪ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছে ১৯৮ এবং হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে ১৮৪ জন বাড়ি ফিরে গেছেন। হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন ১৫ জন।
[৫] এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন ও কারফিউ চলাকালীন সময়ে ২১ জুলাই থেকে ২৪ জুলাই সকাল পর্যন্ত ইমার্জেন্সিতে ভর্তি হয়েছে ৮২০ জন। এক প্রশ্নের জবাবে উপ-পরিচালক বলেন, এসব রোগীদের মধ্যে বেশীর ভাগই দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে এসেছেন। আউটঢোরে রোগী দেখা হয়েছে প্রায় ২ হাজারের অধিক রোগী।
[৬] এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিসংখ্যান রোমের একটি সুত্রে জানা গেছে মেডিকেলে আসার পথে বা এসে ৭৯ জন মারা গেছে। তাদের ৬০ জনকে মৃত অবস্থায়ই আনা হয়েছিল। ১৯ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। [৭] গত কয়েক দিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আন্দোলন চলাকালে সংঘর্ষে আহত ১ হাজার ২৭৬ জন আসে। ক্যাজুয়ালটি বিভাগের ১০১ ও ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। শেরে বাংলা নগর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক অধ্যাপক ডা. মো. শফিউর রহমান বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি রোগী ১১৭ জন আর চিকিৎসাসেবা নিয়ে ১৩০ জন বাড়ি ফিরে গেছেন।
[৮] বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগী মারা গেছে চারজন, সড়ক দূর্ঘটনায় আক্রান্ত ৬জন মারা গেছেন। গত মঙ্গলবার রোগী ভর্তি হয়েছেন, ৩৩০ জন আর চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৩৪০ জন। আউটডোরে রোগী দেখা হয়েছে ৭২৩ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রোগী ১ হাজার ১৯৬ জন।
[৯] এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খোজ নিয়ে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে শুক্রবার (১৯ জুলাই) দুর্বৃত্তরা অধিদপ্তরের মহাখালীতে অবস্থিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পুরাতন ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সেই সঙ্গে কোভিড হাসপাতালেও হামলা করে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস অর্থাৎ যেখানে সারা দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা কন্ট্রোল করা হয়, সেখানেই আগুন দেওয়া হয়েছে।