
আতঙ্ক কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার মোবাইল অ্যাপ কাজ না করলেও বাজারমুখী বিনিয়োগকারীরা

মাসুদ মিয়া: দেশের শেয়ারবাজার বুধবার বড় ধরনের ক্রেতা সংকট দেখা দেয়। এতে মূল্যসূচকের বড় পতনের পাশাপাশি দেড় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার আতঙ্ক কেটে শেয়ারবাজারে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ফলে মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। আগেরদিনের মতো গতকালও কাজ করেনি মোবাইল অ্যাপ। ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীরা লেনদেন করতে পারেননি। একই সঙ্গে ইন্টারনেটেও ধীরগতি। অবশ্য সবগুলো ব্রোকারেজ হাউস নির্ধারিত সময়ে লগইন করে লেনদেনে অংশ নিতে পেরেছেন এবং ব্রোকারেজ হাউজগুলো থেকে লেনদেনে সমস্যা হয়নি। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বুধবার ব্রডব্যান্ড নেট আসলেও কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা ছিল। গতকাল ইন্টারনেটের গতি অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে দেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তাতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছিল। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় সে আতঙ্ক কেটে গেছে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে।
মোবাইল অ্যাপ কাজ না করলেও বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হয়েছেন। এতে বেড়েছে ক্রেতা। ফলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার। এবিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, আগের দিনের মতো বৃহস্পতিবারও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা লেনদেন করতে পারেননি। আবার ইন্টারনেটের গতিও কিছুটা কম ছিল। তবে বৃহস্পতিবার বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ভালো ছিল। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারে। দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। মূল্যসূচকেরও বড় উত্থান হয়েছে। এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৪ পয়েন্ট কমে যায়। ফলে আবারও পতনের আতঙ্ক পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের। অবশ্য সে আতঙ্ক কাটতে খুব বেশি সময় লাগেনি। বাজারে ক্রেতার চাপ বাড়ায় অল্প সময়ের মধ্যেই দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। লেনদেনের সময় গাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকাও বড় হয়। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৮৬ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৬ প্রতিষ্ঠানের। এছাড়া ৪০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪১৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৯৩২ পয়েন্টে উঠে এসেছে। সূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতি। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৯৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৫৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৩৩৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৯ লাখ টাকার। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের ২৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- অগ্নি সিস্টেম, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, এনআরবি ব্যাংক, রংপুর ফাউন্ড্রি, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার এবং ফারইস্ট নিটিং। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৭ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৯টির। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৯টির এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
