শাহীন খন্দকার : [১] কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে ১৮ জুলাই বেলা ১১ টায় মহাখালীতে রেললাইন অবরোধের পর সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে গত সাত দিনে টিকিট রিফান্ড ও বিভিন্ন জায়গায় হামলায় রেলের ক্ষতি ২২ কোটি ৩ লাখ ৮ হাজার টাকা।
[২] গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর রেল ভবনে রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম এ তথ্য জানিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, সারা দেশে কয়েকটি জায়গায় ট্রেনে ও স্টেশনে রাখা বিভিন্ন যন্ত্রাংশে হামলা করা হয়েছে। এই কারণে এখনো ট্রেন চালানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। [৩] এসময়ে তিনি জানান, পরিস্থিতি বুঝে ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জিল্লুল হাকিম আরও বলেন, ট্রেন না চলার কারণে টিকিট রিফান্ড করতে হচ্ছে। এটা সবচেয়ে বড় ক্ষতি। এখন পর্যন্ত ১৬ কোটি ২৯ লাখ টাকার বেশি টিকিট রিফান্ড করা হয়েছে যাত্রীদের।
[৪] এ ছাড়া পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল মিলিয়ে রেলের মোট ক্ষতি হয়েছে ২২ কোটি ৩ লাখ ৮ হাজার টাকা। মন্ত্রী বলেন, সহিংসতায় হামলাকারীরা কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের তিনটা কোচে আগুন দিয়েছে। এ ছাড়া সোনার বাংলা, কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পারাবত এক্সপ্রেসের বিভিন্ন কোচে হামলা করে ভাঙচুর করেছে। বিভিন্ন স্টেশনে বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ, সিগন্যাল ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তবে রেললাইন উপড়ে ফেলার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
[৫] রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম আরও বলেন, রেলের ইঞ্জিন ও কোচের সংখ্যা কম। তারপরও রেল সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এখন এই মুহূর্তে ট্রেন পরবর্তী পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করেই চলাচল করবে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা হয়েছে বলে তিনি জানান।
[৬]এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার কারফিউ শিথিল থাকা অবস্থায় সকাল ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা-টাঙ্গাইলসহ আরও কিছু রুটে কমিউটার ও লোকাল ট্রেন চলবে। ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি সচল হলে চলবে আন্তঃনগর ট্রেন। কিন্ত নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন জানিয়েছেন, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। সকাল থেকে একটি ট্রেনও স্টেশন ছেড়ে যায়নি
[৭] উল্লেখ্য সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং দূবৃত্ত্বদের হামলার কারণে সারাদেশে গত ৭ দিন ধরে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। গত ১৮ জুলাই রাজধানীর নাখালপাড়া রেলগেট এলাকায় কোটা আন্দোলনকারীরা রেললাইনের ওপর আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করলে জননিরাপত্তার স্বার্থে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।