সোহেল রহমান : [১] সমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই ২০২৩-মে ২০২৪) দেশের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি ডলার। এর মধ্যে মে মাসে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ১৫২ কোটি ডলার।
[২] তবে আমদানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যাওয়ায় এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার। [৩] বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে আমদানির পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। ফলে লেনদেন ভারসাম্যের (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) ওপর চাপ কিছুটা কমেছে।
[৪] সংশ্লিষ্টদের মতে, রিজার্ভের অবস্থা স্বস্তিজনক না থাকায় কম আমদানি অর্থনীতির ওপর চাপ কিছুটা কমিয়েছে। চলমান ডলার সংকট আমদানি কমার একটি বড় কারণ। তবে আমদানি কমে যাওয়াটা অর্থনীতির জন্য ভালো নয়।
[৫] বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গত দুই বছর দেশের ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট নেতিবাচক ছিল। যার ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সরাসরি রিজার্ভের অর্থ দিয়ে বিদেশি পেমেন্ট করতে হয়েছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-মে পর্যন্ত ব্যালেন্স অব পেমেন্টে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৮৮ কোটি ডলার।
[৬] একই সময়ে চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৯৮ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময় ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২০০ কোটি ডলারের বেশি। [৭] সূত্রমতে, রেমিটেন্সে ১০ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও রপ্তানি কমে যাওয়ায় চলতি হিসাবে ঘাটতি কিছুটা বেড়েছে। মূলত বাণিজ্য ঘাটতি বেশি থাকায় রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি দিয়েও কারেন্ট অ্যাকাউন্টকে উদ্বৃত্ত করা যায়নি।
[৮] প্রসঙ্গত: গত কয়েক বছর ধরে ভুলভাবে রপ্তানি বেশি হওয়ার হিসাব দেখানো হচ্ছিল। কয়েকদিন আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সেই হিসাব সংশোধন করার পর অবশেষে রপ্তানি তথ্যের গরমিলের রহস্য সমাধান হয়েছে। হিসাব সংশোধনের ফলে গত অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়কালে রপ্তানি কমেছে প্রায় ১ হাজার কোটি ডলার। ফলে এতদিন ইতিবাচক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি প্রকৃতপক্ষে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে রূপ নিয়েছে।
[৯] সূত্র মতে, এছাড়া সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক। বাংলাদেশে যে এফডিআই আসে এটা মূলত পুনঃবিনিয়োগের আয়, নতুন এফডিআই কম।