শাকিবুল হাসান : [১] ফরিদপুরের জনের হাটে গত কয়েক দিনে দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে শ্রমিক কমেছে অন্তত আটগুণ। ধান রোপণ ও পাট কাটার জন্য ২০০-২৫০ টাকা বেশিতেও পাওয়া যাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত শ্রমিক। [২] ফরিদপুর শহরের পশ্চিম গোয়ালচামট এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উত্তর পাশে ৩০ শতাংশ জমির ওপর অবস্থিত হাটটির নাম দেওয়া হয়েছে মিজান নগর কৃষান হাট। স্থানীয়দের কাছে জন হাট হিসেবে পরিচিত এই হাটটি। মূলত ফরিদপুরসহ এই অঞ্চলে শ্রমিকের চাহিদা বেশি থাকে, বিশেষ করে ধান রোপণ ও কাটার সময়। সেই প্রয়োজন থেকেই এই হাটটি গড়ে উঠে।
[৩] হাট কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে পাট কাটা ও রোয়া ধান রোপণের মৌসুম হওয়ায় প্রতিদিন গড়ে এখানে ৭০০ থেকে ৮০০ শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু গত কয়েক দিনে কারফিউ ও দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য শ্রমিকের সংখ্যা অনেক কমে গেছে।
[৪] গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, রৌদ্রোজ্জ্বল পুরো জনের হাটের খাঁ খাঁ অবস্থা। অন্যান্য সময় যেখানে দেড় থেকে দুই হাজার মানুষের আনাগোনা থাকে সেখানে হাতেগোনা দেড় থেকে দুইশো মানুষের আনাগোনা চোখে পড়ে। এদের অনেকেই কারফিউর আগে কাজে গিয়েছিলেন। তবে কাজ শেষ হলেও যানবাহন না চলায় তারা হাটে ফিরে আসতে পারেননি। ওই কয়দিন গৃহস্থের বাড়িতেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। আবার নতুন করে বিক্রি হওয়ার জন্যও এসেছেন কিছু শ্রমিক। তারা বয়সে তরুণ হওয়ায় বাজারে তাদের চাহিদা কম।
[৪] ভাঙ্গার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর গ্রাম থেকে চারজন শ্রমিক নিতে এসেছেন ফিরোজ মিয়া (৪৫)। তিনি বলেন, পাট কাটার জন্য শ্রমিক দরকার বলে আইছিলাম। সারা হাট ঘুইরা মাত্র দুইজন শ্রমিক পছন্দ হইলো। হাটে তেমন শ্রমিকই নাই, আর বয়সী শ্রমিক তো আরও নাই।
[৫] রংপুরের মাহিগঞ্জ এলাকা থেকে শ্রম বিক্রি করতে এসেছেন মাহিদুর মিয়া (৩১)। তিনি বলেন, ১০ দিন আগে কাজে গিয়েছিলাম রাজবাড়ী সদরের একটি গ্রামে। সেখানে মাত্র ছয় দিনের কাম ছিল। পরে হুড়োহুড়ি লাইগা যাওয়ায় মালিকের বাড়িতেই খাইছি। বাস খোলার পর গত বুধবার আবার এই হাটে আইছি।