চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : [১] শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন, শাট ডাউন ও দেশজুড়ে সংঘাতের কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা। [২] দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে আম পাঠাতে না পারায় চাষীদের উৎপাদিত আম পঁচে নষ্ট হয়েছে বাগানেই। কেউ কেউ আম পাড়লেও বিক্রি করতে হয়েছে কম দামে। সব মিলিয়ে আন্দোলন-সংঘাত ও কারফিউয়ের ১০ দিনে জেলার চাষী ও ব্যবসায়ীদের ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরেন্দ্র কৃষি উদ্দ্যোগ এর সিইও ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মো. মুনজের আলম।
[৩] তিনি আরও জানান, আমের মধ্যম ও নাবী জাতের যখন ভরা মৌসুম, তখনই ছাত্র আন্দোলনের নামে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে সংঘাত। এতে জেলার বাইরে আম পাঠাতে পারেননি চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাষী ও ব্যবসায়ীরা। আম পেকে নষ্ট হয়েছে বাগানে। [৪] ক্ষতি এড়াতে চাষীরা গাছ থেকে আম পাড়লেও স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে হয়েছে কম দামে। ফলে লোকসানের শিকার হয়েছেন চাষী ও ব্যবসায়ীরা।
[৫] তিনি বলেন, জেলা থেকে প্রতিদিন ৩ শতাধিক ট্রাকে সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন আম যায় দেশের অভ্যন্তরীন বাজারে। এই আমের মূল্য গড়ে ২৫ কোটি টাকা। আন্দোলনের ১০ দিনে ২৫০ কোটি টাকার আম বেচা-কেনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কিছু আম পঁচে নষ্ট হওয়ায় এবং কম দামে বিক্রি করায় এই অঙ্ক গিয়ে দাঁড়ায় ১৫০ কোটি টাকার ঘরে। কাজেই ওই ১০ দিনে চাষী ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতি ১০০ কোটি টাকা।
[৬] রিজিওনাল হর্টিকালচার রিসার্চ স্টেশন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোখলেসুর রহমান বলেন, এবছর দেরিতে মুকুলায়ন এবং বিরূপ প্রাকৃতিক অবস্থার কারণে আমের উৎপাদন কম হয়েছে।
[৭] গত কয়েকদিনের আন্দোলন ও কারফিউ এর কারণে আম পরিবহনে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় চাষী ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মধ্যে পড়লেও এবার আমের দাম বেশি থাকায় ক্ষতি কিছুটা হ্রাস পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
[৮] এদিকে কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, এখনো গাছে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ আম রয়েছে। নাবি জাতের এই আমের মধ্যে রয়েছে ফজলি, আশ্বিনা, আম্রপালি, বারি-১১, কাটিমন, গৌড়মতি ইত্যাদি।
[৯] সূত্রমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার, ৮২৫ টি আমগাছ রয়েছে এবং গতবছর জেলায় ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৬২৫ টন আম উৎপাদন হয়েছিল।