
দীর্ঘ মেয়াদী প্ল্যানে, বিদেশি পয়সায় কোনো আন্দোলন হচ্ছে না এখানে

রুমি আহমেদ
মানুষ মনে করে, আমি বিএনপি সমর্থক। করে তো করুক। কারণ ওরা আমাকে দেখেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করতে। কিন্তু আমাকে বিএনপি সরকারকে সমালোচনা করতে দেখেনি। দেখেনি, কারণ আমাদের মেমোরি গোল্ডফিশের মতো, আর বিএনপির আমলে ফেসবুক ছিল না। এতো ফেসবুক ফ্রেন্ডও ছিলো না। বিএনপির যেই কঠোর নিন্দা করেছি, আমার ওই সময়কার ব্লগগুলো কিন্তু তার প্রমাণ হয়ে আছে। যে কেউ আমার ব্লগ সাইট দেখে নিতেই পারেন। সবই পাবলিক ডোমেইনে আছে। পুরোনো দিনের কথা বাদ দিলাম।
কয়েকদিন আগেও একটা লংফর্ম ইংরেজি এসে লিখেছি যে তারেক রহমানের কখনোই দেশে বাংলাদশের রাজনীতিতে ফেরা উচিত হবে না। আমি লিখেছি একটা, সে একটা প্যাথেটিক ফেইলিউর। কোট করছি আমার নিজের লেখার, ‘ঋড়ৎ ঃযব ষধংঃ ১৫ ুবধৎং ঞধৎরয়ঁব জধযসধহ’ং ংঃৎববঃ ভড়ৎপব ড়ভ যরং ঃবষবঢ়যড়হব নঁফফরবং পড়ঁষফ হবাবৎ যড়ষফ ঃযব ংঃৎববঃ ধমধরহংঃ ঢ়ড়ষরপব ভড়ৎ বাবহ ড়হব যড়ঁৎ. অহু ড়হব যড়ঁৎ ঢ়ড়ষরপব ধপঃরড়হ ধিং বহড়ঁময ঃড় ংবহফ ঃযবস ঃড় যরনবৎহধঃরড়হ ভড়ৎ ভড়ঁৎ ুবধৎং. ওঃ ধিং ধষধিুং ঃড়ষফ – হড়নড়ফু ংঁভভবৎবফ সড়ৎব ঃযধহ ইঘচ – যঁহফৎবফং ড়ভ ঃযবস ফরবফ ধহফ বি ংযড়ঁষফ হড়ঃ নষধসব ঃযবস ভড়ৎ ঃযবরৎ ভধরষঁৎবং. ইঁঃ ঃযরং ঃরসব – ঃযবংব ংঃঁফবহঃং যধাব ংযড়হি ঃযধঃ ুড়ঁ পধহ পড়হঃৎড়ষ ঃযব ংঃৎববঃ ফবংঢ়রঃব ষড়ংরহম ৩০০ ড়ভ ুড়ঁৎ পড়সৎধফবং রহ ষবংং ঃযধহ ধ বিবশ. ঞযরং সড়াবসবহঃ সধশবং রঃ পষবধৎ ঃযধঃ ঞধৎরয়ঁব জধযসধহ রং ধহ ঁঃঃবৎ ভধরষঁৎব রহ বাবহ ড়ৎমধহরুরহম মৎড়ঁহফ ভড়ৎপব, ষবঃ ধষড়হব ষড়ননুরহম রহঃবৎহধঃরড়হধষষু ঃড় ষধঁহপয ধহ রহঃবৎহধঃরড়হধষ ঢ়ৎবংংঁৎব মৎড়ঁঢ়. ঞজ ংযড়ঁষফ শহড়ি ঃযধঃ ঃযব শরফং ভরমযঃরহম ধহফ মরারহম ঃযবরৎ ষরাবং যধাব হড় ষড়াব ষড়ংঃ ভড়ৎ ঞধৎরয়ঁব জধযসধহ. গৎ. ঞজ হববফ ঃড় ংঃড়ঢ় ফধু-ফৎবধসরহম ড়ভ নবপড়সরহম চগ ড়ভ ইধহমষধফবংয. ঐব রং ধ ভধরষঁৎব ধং ধহ ড়ঢ়ঢ়ড়ংরঃরড়হ ষবধফবৎ ধহফ াড়রপব ড়ভ ইধহমষধফবংয. খবঃ যরস ংঃধু রহ খড়হফড়হ শববঢ় ংঢ়বহফরহম ধষষ যরং ধিশব যড়ঁৎং পযধঃঃরহম রিঃয যরং ঃবষবঢ়যড়হব নঁফফরবং.’
আমি যদি বিএনপি হয়েও বিএনপির শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে এতো কঠোর কথা বলতে পারি, আমার আওয়ামী লীগ সমর্থন করা বন্ধুরা-আপনারা দলীয় আনুগত্যের বাইরে এসে একটা মৃত্যুর জন্যও শোক ও প্রকাশ করতে পারেন না? ত্রিশ-চল্লিশ বছর আগে আমরা যখন টিনএজার ছিলাম তখন সিট পলিটিক্সের জন্য আমরা সবাই দু-তিন ট্রাইবাল গ্যাংয়ের একটার মেম্বার হতে বাধ্য হয়েছিলাম। কেউ ছাত্র দল, কেউ ছাত্রলীগ। আবার কেউ জাসদ। কিন্তু ত্রিশ চল্লিশ বছর পরে এসে অনেকে ষাট-পঁয়ষট্টি বছর বয়সে এসে এখনো যে অনেকে অনেকে সেই ট্রাইবলিজম-অন্ধ গ্যাং মেন্টালিটি থেকে বের হতে পারেনি, তা আমাকে খুব অবাক করে। তাহলে উইজডম-আর্নড এক্সপেরিয়েন্স জিনিসগুলো কি ওভার-রেটেড? আমরা বারবার ইতিহাস ভুলে যাই কেন? ৫২ তে ছাত্ররা যখন আন্দোলন করছিলো-চার জন গুলি খেয়ে মারা গেলে-দেশ রোষে ফেটে পড়েছিল। পাকিস্তানিরা বলছিলো, আন্দোলনকারীরা পাকিস্তানবিরোধী। ৬৯-এ ছাত্রে-জনতা যখন আন্দোলন করছিলো-আসাদ আর মতিউর মারা গেলো-গণ অভ্যুত্থান হয়ে গেলো। সবাই গণতন্ত্র চাচ্ছিলো-আইয়ুব ডিক্টেটরের পতন চাচ্ছিলো। সরকার বলছিলো, এগুলো সব ভারতের দালালদের কাজ।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের চোখে আমরা সবাই ছিলাম ভারতীয় বেতনভুক জঙ্গি। আপনারা এখন পাকিস্তানিদের মতোই আচরণ করছেন। সবকিছুর মধ্যে বিদেশি জুজু দেখছেন। এরশাদের আমলে ছাত্ররা আন্দোলন করেছে গণতন্ত্রের দাবিতে। আমরা সবাই জানি এখানে কোনো বিদেশি শক্তির হাত ছিল না। আপনারা যারা আওয়ামী লীগ করেন, তারা জানেন ১৯৯৪-১৯৯৫ সালে আপনারা যখন আন্দোলন করলেন, কেয়ার টেকার সরকারের দাবিতে, তা আপনাদের দাবিই ছিলো। কোনো বিদেশি শক্তির খেলা ছিল না। তাহলে এখন এই কথাটা কেন বুঝতে পারছেন না যে, দু-দুবার একতরফা নির্বাচন হয়েছে। দেশে স্বাভাবিক কোনো অবস্থা নেই। এটা তো স্বীকার করবেন এরশাদ আমলের মতোই এখনো দেশে গণতন্ত্র নেই। দুজনের মৃত্যুতে ৬৯ এ আয়ুব পড়ে গেলো-চার পাঁচজন মেরে এর গণশত্রু হয়ে গেলো। এখন ছাত্র মৃত্যুর সংখ্যা ১৫০ ক্রস করেছে। মানুষ কি প্রতিবাদীও হতে পারবে? বিদেশি প্ল্যানিং আর অর্থ কেন লাগবে? কেন ভাবতে পারছেন নাÑ এটা বিদেশি কোনো কন্সপিরেসি না। দীর্ঘ মেয়াদী প্ল্যানে বিদেশি পয়সায় কোনো আন্দোলন হচ্ছে না এখানে। দেশের ইতিহাস জানেন না? কেন বুঝতে পারেন না যে মানুষ নিজ থেকেই মুক্তি চাইতে পারে। কেন ত্রিশ বছর আগের ছাত্র রাজনীতির আপনার চোখে যে ঠুলি পড়িয়ে দিয়েছে। আপনার বিবেককে কিনে নিয়েছে তা থেকে বের হতে পারছেন না? কেন নিজের বিবেককে মুক্ত করতে পারছেন না?
আর আমাদের ইতিহাসে গণআন্দোলনে দমাতে এতো মানুষ কেউ কখনো মারেনি। কেন এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডগুলোর প্রতিবাদ করতে পারছেন না? এই নিহত বাচ্চাগুলোর জন্য আপনার মন একটুও কাঁদে না? এরা তো অনেকে আপনার নিজের ছেলে মেয়ের চেয়েও ছোট। চল্লিশ বছর আগের সিট্ পলিটিক্স আপনার বিবেক এভাবে কিনে নিয়েছে? আপনাকে আমৃত্যু এতোই বিবেকহীন করে ফেলেছে? ফেসবুকে আপনাদের কাছ থেকে একটা মন্তব্য পাইনি। এতগুলো লাশের পরেও। আমি খুব আশাবাদী মানুষ। কিন্তু আপনারা মানবতার প্রতি আমার বিশ্বাস টলিয়ে দিচ্ছেন। লেখক: চিকিৎসক
