মাসুদ মিয়া: [১] বাংলাদেশে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স জুলাই মাসে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। চলতি জুলাই মাসের প্রথম ২৭ দিনে (১ থেকে ২৭ জুলাই) প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স দেশে এসেছে ১৫৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম ২৭ দিনে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ১২৪ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২২ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে আট কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম ২৭ দিনে একক ব্যাংক হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসী আয় ৪০ কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার এসেছে। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০ কোটি ২৯ লাখ ডলার। এরপর রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে আট কোটি ৬৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কো?টি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার, মার্চে ১৯৯ কো?টি ৭০ লাখ ৭০ হাজার ডলার, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার ডলার, মেতে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং জুনে ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার এসেছে।
[২] এদিকে গত ১৯ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত অবশ্য ব্যাংকিং কার্যক্রম চলেছে মাত্র একদিন। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ন্ত্রণে ১৯ জুলাই শুক্রবার রাত থেকে কারিফউ জারি করে সরকার। এরপর মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ ছিল। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ব্যাংকের অনলাইন লেনদেনও বন্ধ ছিল।
[৩] কয়েকদিন লেনদেন বন্ধের পর ২৪ জুলাই ব্যাংক চালু হয়। ওই দিন লেনদেন চলে সকাল ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা। ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ১৯ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই বৈধ পথে তথা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে প্রবাসী আয় আসাও সম্ভব ছিল না। এ সময়ের মধ্যে যারা বিদেশ থেকে প্রবাসী আয় পাঠিয়েছেন, গত বুধবার ব্যাংক খোলার প্রথম দিনেই তা দেশের ব্যাংকে জমা হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেটি হয়নি।
[৪] বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, যদি কেউ বিদেশ থেকে প্রবাসী আয় পাঠিয়ে থাকেন, ব্যাংকগুলো তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিতরণ করতে বাধ্য। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশের প্রবাসী আয় প্রেরণকারী রেমিট্যান্স হাউজগুলো যদি এ আয় ধরে রাখে, তাতে তা দেশে আসতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।