আজ থেকে স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চালু হচ্ছে
শাহীন খন্দকার : [১] কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সহিংসতা শুরু হলে বাংলাদেশ রেলওয়ে পরিষেবা স্থগিত করে। দুই সপ্তাহ পরে আজ বৃহস্পতিাবার থেকে স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচল শুরু করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কারফিউ শিথিল সময়ে এই ট্রেন চালানো হবে। ট্রেন চালু হওয়াকে সামনে রেখে স্টেশন ধোয়ামোছা ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। [২] গতকাল বুধবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইফতেখার আলম রাজন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তীতে দূরপাল্লার ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রেলওয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রেলপথ মন্ত্রণালয় ঢাকা থেকে স্বল্প দূরত্বে কয়েকটি কমিউটার ট্রেন পরিচালনা করবে। যতক্ষণ কারফিউ শিথিল থাকবে, ততক্ষণই এই ট্রেনগুলো চলবে। [৩] রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার উদ্দেশ্যে তিতাস কমিউটার ছাড়াও ঢাকা থেকে নরসিংদী, টাঙ্গাইল, জয়দেবপুর, নারায়ণগঞ্জের মধ্যে কয়েকটি কমিউটার ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
[৪] দেশের অন্যান্য জেলাতে ও স্বল্প দূরত্বে কমিউটার ট্রেন চলাচল করতে পারে। কমিউটার ট্রেনগুলো পরীক্ষামুলকভাবে পরিচালনা করে সার্বিক পরিস্থিতি নজরে রাখা হবে। এরপর ধীরে ধীরে আন্ত:নগর ট্রেনগুলো পরিচালনা শুরু করবে রেলওয়ে। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে ১৮ জুলাই দুপুর থেকে বন্ধ রয়েছে রেল যোগাযোগ বললেন, রেলের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী।
[৫] তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার একবার আসা-যাওয়া করতে পারে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথে স্বাভাবিক সময়ে ২০ বারের বেশি কমিউটার ট্রেন যাতায়াত করে। তবে শুরুতে চার-পাঁচবার আসা-যাওয়া করতে পারে বলে রেলের মহাপরিচালক জানিয়েছেন। এদিকে আমাদের রাজশাহী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, রেলের পশ্চিমাঞ্চলে (রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগ) কয়েকটি পথে ট্রেন চলাচল করতে পারে।
[৬] এর মধ্যে রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত চলাচল করবে কমিউটার ট্রেন। এ ছাড়া ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রাজবাড়ী পর্যন্ত কমিউটার ট্রেন চালুর পরিকল্পনা আছে। এর বাইরে রাজশাহী থেকে রাজবাড়ী ও ফরিদপুরের পথেও লোকাল ট্রেন চলতে পারে। [৭] চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারি পথে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা আছে রেল কর্তৃপক্ষের। বর্তমানে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চলাচল করছে। বৃহস্পতিবার থেকে মালবাহী ট্রেনও কিছু চলতে পারে বলে রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। রেলওয়ের একাধিক সূত্র জানায়, প্রতিদিন ৪০০টির মতো যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করে।
[৮] এর মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী, বন্ধন এবং মিতালি এক্সপ্রেসও রয়েছে। আন্তনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হয় ১০ দিন আগে থেকে। ট্রেনে প্রতিদিন যাত্রী চলাচল করে প্রায় আড়াই লাখ।
[৯] উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাতের কারণে ১৮ জুলাই দুপুর থেকে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনার ভিত্তিতে রেল কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে। রেলের কর্মকর্তারা বলছেন, এভাবে রেল চলাচল বন্ধ রাখা নজিরবিহীন।