আমিনুল ইসলাম : [১] দাম বেঁধে দেওয়ার পর রাজধানীর মানি চেঞ্জারগুলো প্রায় ডলারশূন্য হয়ে পড়েছে। প্রতি ডলারের দাম ১১৯ টাকায় নির্ধারণ করে দেওয়ার পর রাজধানীর মানি চেঞ্জারে এই দামে কোনো ডলার বিক্রি হচ্ছে না। নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে না পারায় তারা ডলারের আনুষ্ঠানিক বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। তবে বিভিন্ন অলিগলিতে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা দামে। মতিঝিল ও ফকিরাপুল মানি চেঞ্জারে খবর নিয়ে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
[২] কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে সংঘাত-সংঘর্ষ, কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধের প্রেক্ষাপটে ক?মে গে?ছে রেমিট্যান্স। এর প্রভাবে দুই-তিন দি?নের ব্যবধানে খোলাবাজারে (কার্ব মার্কেট) ৩ থে?কে ৪ টাকা বেড়েছে মা?র্কিন ডলারের দাম। এমন পরিস্থিতিতে কার্ব মার্কেটে ডলারের দর নির্ধারণ করে দিয়েছে মানি চেঞ্জারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। সংগঠনটি খুচরা প্রতি ডলারের মূল্য সর্বোচ্চ ১১৯ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। এর চে?য়ে বেশি ডলার বিক্রি করলেই ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
[৩] গত বুধবার মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এমসিএবি) পক্ষ থেকে সব মানি চেঞ্জারকে চিঠি দিয়ে ডলারের দাম ১১৯ টাকায় বেঁধে দেওয়ার তথ্য জানানো হয়। এরপরের দিনই এই চিত্র দেখা গেল। জানতে চাইলে সংগঠনটির সভাপতি এম এস জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে আমরা চিঠি দিয়েছি। আমাদের কিছু করার নেই। বিদেশ থেকে যাঁরা আসেন, তারা আমাদের কাছে ডলার বিক্রি করে থাকেন। বিদেশ থেকে মানুষ আসা কমে গেছে, এ জন্য ডলারের সরবরাহ নেই। ফলে মানি চেঞ্জারে ডলার মিলছে না। এটাই বাস্তব অবস্থা। আর ব্যাংকও আমাদেরকে কোনো ডলার দিচ্ছে না। ব্যাংক আমাদের কাছে ১১৮ টাকায় ডলার দিলে ১১৯ টাকার মধ্যে বিক্রি করা সম্ভব ছিল। [৪] বুধবার মতিঝিলের একাধিক মানি চেঞ্জারে সরেজমিনে গেলে বিক্রেতারা জানান, ১১৯ টাকায় বিক্রি করার মতো কোনো ডলার নেই। তারা বাইরে থেকে সংগ্রহ করে দেওয়ার আগ্রহ দেখান, এ জন্য ডলারপ্রতি ১২৫ টাকা দাম দিতে হবে। নির্দেশনার পরও নির্ধারিত দামে কেন ডলার মিলছে না, তা জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, তাঁরা কম দামে ডলার সংগ্রহ করতে পারছেন না, ফলে ১১৯ টাকায় তা বিক্রি করাও সম্ভব হচ্ছে না।
[৫] দামের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য চাইলে এই বিক্রেতারা নাম প্রকাশ করে মন্তব্য করতে রাজি হননি। এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না করার জন্যও তাঁরা অনুরোধ জানান। তাঁরা বলেন, নাম লিখলে নানা সংস্থা তাঁদের ব্যবসা পরিদর্শন করবে এবং এর ফলে তাঁদের লাইসেন্সও বাতিল হয়ে যেতে পারে।
[৬] লাইসেন্স নিয়ে যাঁরা ব্যবসা করেন, তাদের কাছে নির্ধারিত দামে ডলার না পাওয়া গেলেও মতিঝিলের অলিগলির খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হচ্ছে। তবে এই খোলাবাজারে ডলারের দাম বেড়ে আগেই ১২৫ টাকায় উঠে গেছে। ডলারের দাম এই পর্যায়ে উঠে যাওয়ার পরই মানি চেঞ্জারদের পক্ষ থেকে প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দাম ১১৯ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।