কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এক দফা দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক : [১] সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে খুনের প্রতিবাদ ও ১ দফা দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় মানুষের ঢল নেমেছে। এখানে ঢোল-খঞ্জনিসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের তালে ভুয়া, ভুয়া স্লোগানে মেতেছেন আন্দোলনকারীরা।
[২] গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহীদ মিনারে সমবেত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন নাহিদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে।
[৩] নাহিদ ইসলাম বলেন, আর এক মিনিটও এই সরকার থাকবে না। এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পদত্যাগ।
[৪] তিনি বলেন, আমরা আর তাদের কাছে কী বিচার চাইব? তারাই তো খুনি। আমাদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আপনাদের আন্দোলনের কারণে আমরা ছাড়া পেয়েছি। আজকেও গুলি চলেছে। এই পরিস্থিতিতে এক দফা ঘোষণা করছি। শেখ হাসিনা বলেছেন, আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে। তিনি আগেই বুঝেছেন, দরজা খোলা রাখার সময় হয়েছে। আমরা আসছি। এই যে খুন-হত্যা হয়েছে, এজন্য তাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং বিচারের আওতায় আনতে হবে। শুধু শেখ হাসিনা নন, সব মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে।
[৫] নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, আমাদের এক দফা হলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং এই সরকারের লুটপাট-দুর্নীতির বিচার। আমরা জেলের তালা ভেঙে আমাদের ভাইদের আনব। যে অভ্যুত্থান শুরু হয়েছে, এতে সব জনতা যোগ দিন। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে সম্মিলিত মোর্চা গঠন করব। আমরা আমাদের দেশের রূপরেখা ঘোষণা করব। আগামীকাল থেকে সর্বত্র অসহযোগ আন্দোলন হবে।
[৬] গতকাল শনিবার দুপুর থেকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আন্দোলনকারীদের নেচে-গেয়ে এভাবেই প্রতিবাদী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে। তাদের হাতে দেখা গেছে সরকারবিরোধী বিভিন্ন লেখাসম্বলিত প্ল্যাকার্ড।
[৭] পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল শনিবার বেলা ২টার আগে থেকে আন্দোলনকারীরা জড়ো হতে শুরু করেন কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে আসছে মানুষ।
[৮] আন্দোলনকারীদের স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে শহিদ মিনার চত্বরসহ আশপাশের এলাকা। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রিকশাচালকদেরও স্লোগানে দিতে দেখা যায়।
[৯] গত শুক্রবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ এক ভিডিও বার্তায় এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে আজ রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
[১০] অন্যদিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুযায়ী রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বৃষ্টিতে ভিজে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন। গতকাল শনিবার দুপুর থেকে তারা ঢাকার প্রবেশমূখ দখল করেন।
[১১] এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরুর পর থেকে আশপাশের দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
[১২] মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে এ সময় আন্দোলকারীদের ওপর গুলি বন্ধের দাবি জানিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিতে দেখা যায়। ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে সরকার চাকরিতে কোটা বাতিল করে। এটি চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা রিট করেন। গত জুন মাসে হাইকোর্ট কোটা বহাল রাখেন।
[১৩] এমন পরিস্থিতে বিচারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখে।