দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা হতে পারে : পাউবোর
শাহীন খন্দকার : [১] টানা বৃষ্টির ফলে বন্যাপ্রবণ নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। গতকাল শনিবার এমন পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। [২] পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী দুদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে। অপরদিকে পদ্মা নদীর পানির সমতল বাড়ছে।
[৩] আগামী ২৪ ঘণ্টায় উভয় নদীর পানির সমতল বাড়তে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা নদীসমূহের পানির সমতলও বাড়ছে। আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী রবিবার (৪ জুলাই) নাগাদ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদীসমূহের পানির সমতল সময় বিশেষে বাড়তে পারে।
[৪] দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদীসমূহের পানির সমতল বাড়ছে, যা সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল থাকতে পারে। মুহুরি নদী পরশুরাম পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করে সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে এবং পরে হ্রাস পেতে পারে।
[৫] আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, দেশের উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ঘাঘট, যমুনাশ্বরী, আপার করতোয়া, পুনর্ভবা, টাঙ্গন, ইছামতি-যমুনা ও আপার আত্রাই নদীসমূহের পানির সমতল সময় বিশেষে বাড়তে পারে।
[৬] বর্তমানে ফেনী জেলা ও পার্বত্য চট্টগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পাউবো জানিয়েছে, তাদের পর্যবেক্ষণাধীন বিভিন্ন নদ-নদীর ১১০টি পয়েন্টের মধ্যে পানির সমতল বেড়েছে ৬৪টিতে, কমেছে ৪০টিতে।
[৮] অপরিবর্তিত আছে ছয়টি পয়েন্টের পানির সমতল। গত জুন-জুলাইয়ের বন্যায় দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১২ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো সে ক্ষত কাটিয়ে না উঠতেই ফের কড়া নাড়ছে বান।
[৯] পানি উন্নয়ন বোর্ড গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, গত দুদিন ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টি ও উজানের ঢল অব্যাহত থাকলে জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যার শঙ্কা রয়েছে। রংপুরেও তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার নদীতীরবর্তী কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। [১০] পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা ৩টায় তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ভয়ের কারণ নেই, বড় বন্যা হবে না, স্বল্পমেয়াদি হতে পারে।
[১১] সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, আগামীকাল পর্যন্ত সিলেটে ভারি বৃষ্টির আভাস রয়েছে। দুদিনের বৃষ্টি এবং উজানের ঢলে গাইবান্ধার প্রধান চার নদ-নদীর পানি আবারো বাড়তে শুরু করেছে।