ঢাকাসহ সারাদেশের ১৫ জেলায় সংঘর্ষ, থানাসহ আওয়ামী লীগ নেতামন্ত্রীদের বাসভবন ও কার্যালয়ে হামলা, নিহত অন্তত ৬৭ বেশিরভাগই পুলিশ ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী, আহত কয়েকশত
বিশ্বজিৎ দত্ত : [১] বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে গতকাল রোববার থেকে অসহযোগ কর্মসূচি চলছে। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনরতদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে বিভিন্ন জেলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৬৭ জন।
[২] পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ি সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় বিএনপি ও জামায়াতের বিক্ষোভকারীরা হামলা করে ১৩ জন পুলিশসদস্যকে হত্যা করে। আন্দোলনকারী ও বিএনপি-জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা থানা ঘেরাও করে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করে। বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ সদর দপ্তর এবং রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কুমিল্লায় এক পুলিশকে হত্যা করেছে বিক্ষোভকারীরা।
[৩] নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) শহীদুল ইসলাম জানান, মাধবদীতে ৬ জন আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষোভকারীরা। নিহতরা হলেন-নরসিংদী সদর উপজেলার চরদিঘলদি ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক মাধবধী থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহীন (৩৭), মাধবধী থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য মনিরুজ্জামান ভূইয়া (৪৮), নরসিংদী সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাইয়ের ছেলে ছাত্রলীগকর্মী দেলোয়ার হোসেন দেলু (৪৮), মাধবধী থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আনিসুর রহমান সোহেল (৪৩), আওয়ামী লীগ কর্মী কামাল মিয়া (৪৫) ও বাবুল হোসেন (৪৭)।
[৪] স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ১১টার দিকে মাধবধীর বাসস্টেশন এলাকায় আন্দোলনকারীরা জড়ো হয়। দুপুর ১২টার দিকে তারা পৌর ভবনের দিকে যেতে চাইলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে। এতে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়।
[৫] পরে, দুপুর ১টার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আবার সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় মাধবধী বাজার এলাকায় মসজিদের সামনে ৬ আওয়ামী লীগের নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করে ফেলে রেখে যায় আন্দোলনকারীরা।
[৬] রংপুরে পরশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন রায় গাড়ি চালকসহ নিহত হন। সিরাজগঞ্জে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, ঢাকায় মাহনগর উত্তরের কার্যনির্বাহী সদস্য প্রকৌশলি আনোয়ারুল ইসলাম বিক্ষোভকারীদের হামলায় মারা যান।
[৭] অন্যান্যদের মধ্যে ঢাকায় ৫ জন, কিশোরগঞ্জে তিনজন, মুন্সিগঞ্জে দুইজন, নরসিংদীতে ছয়জন, কুমিল্লায় একজন, ফেনীতে পাঁচজন, বগুড়ায় তিনজন, জয়পুরহাটে একজন, পাবনায় তিনজন, বরিশালেএ ২জন, রংপুরে চারজন, মাগুরায় তিনজন ও সিলেটে দুইজন নিহত হয়েছেন।