মাসুদ আলম : গুলশান হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলায় সম্ভাব্য বিদেশি যোগসাজশ খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা। এ ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ বিদেশে থাকা বাংলাদেশীরা।
জানা গেছে, গত ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা চালায় জঙ্গিরা। এসময় দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে তারা। পরে রাতেই তারা জিম্মিদের মধ্যে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে। সেনা কমান্ডোদের হাতে নিহত হয় হামলাকারী ৫ জঙ্গিও। ধারণা করা হচ্ছে, ওই জঙ্গি হামলার পেছনে মদত দেওয়ায় সন্দেহভাজনদের মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় থাকা বাংলাদেশী তরুণ আবু তারেক মোহাম্মদ তাজউদ্দিন কাউসার, জাপান প্রবাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকি এবং কানাডার বাসিন্দা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূদ শায়েখ আবু ইব্রাহিম আল-হানিফ। গুলশান হামলায় বাংলাদেশী এ তিন নাগরিকের ভূমিকা পর্যালোচনা করছে গোয়েন্দা পুলিশ।
২০০৬ সালে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যান লক্ষ্মীপুর সদরের বাসিন্দা আবু তারেক মোহাম্মদ তাজউদ্দিন কাউসার। সর্বশেষ দেশে আসেন অসুস্থ বাবাকে দেখতে ২০১৩ সালে। এরপর থেকে পরিবারের সঙ্গে অনিয়মিত হয়ে পড়ে কাউসারের যোগাযোগ। অবশ্য গেল রমজানে বাড়িতে ফোন করে মা তাহেরা বেগমের খোঁজ-খবর নেন তিনি।
গুলশান হামলার পর নিখোঁজ হিসাবে যে ১০ তরুণের নাম প্রকাশ করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। ওই তালিকায় তাজউদ্দিন কাউসারের নামও রয়েছে। এ তরুণের তথ্য জানতে অস্ট্রেলিয়া ফেডারেল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে ওই যোগাযোগের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে অপারগতা প্রকাশ করেন বিস্তারিত জানাতে। তাজউদ্দিন কাউসার ছাড়াও জাপান ও কানাডা প্রবাসী নিখোঁজ দুই বাংলাদেশী সম্পর্কেও খোঁজ নেয়া হচ্ছে। জাপান প্রবাসী মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকির বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার জিনদপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামে। জনার্দন দেবনাথের ছেলে তিনি। জন্মসূত্রে হিন্দু হলেও পরবর্তীতে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেন তিনি। ২০০১ সালে উচ্চশিক্ষা নিতে জাপানে গিয়ে সেখানে স্থায়ী হন। কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশী বংশোদ্ভূদ তামিম চৌধুরী এখন শায়েখ আবু ইব্রাহিম আল-হানিফ। দেশটির উইন্ডসরের এই বাসিন্দা বেশ কিছুদিন থেকে উগ্রবাদী মতাদর্শের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।
ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, গুলশানে হামলার ঘটনায় দেশি-বিদেশি যোগসাজশ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ হামলার পিছনে কারা রয়েছে তাদের খোঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি