অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধে ইমামের ভূমিকা
আহমদ আবদুল্লাহ
ইসলাম মহান রাব্বুল আলামিনের একমাত্র মনোনীত ধর্ম। মানবজীবনের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, জাগতিক, আধ্যাত্মিক, ইহলৌকিক সব সমস্যার সমাধান রয়েছে ইসলামে। ইসলামি আদর্শ ও জীবন বিধান যথার্থ অনুসরণের মাঝেই ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি নিহিত। পক্ষান্তরে ইসলামি বিধানের প্রতি অবজ্ঞা, অবহেলা ও বিরুদ্ধাচরণ সকল প্রকার দুঃখ-দুর্দশা, লাঞ্ছনা ও অশান্তির মূল কারণ। মানবজাতি মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ। বিশ্বে মানবজাতির মুক্তির বিধানে মহান রাব্বুল আলামিন ও রাসূলের সন্তুষ্টি অর্জনে পার্থিব জীবনে যারা স্রষ্টার নির্দেশিত এবং প্রিয়নবী (সা.)-এর প্রদর্শিত বিধানানুসারে সামগ্রিক জীবন পরিচালনা করবে, তাদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে চিরস্থায়ী শান্তির নীড় সুখময় জান্নাত। যাদের জীবনধারায় ইসলামি বিধি-বিধান উপেক্ষিত, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাময় ও লাঞ্ছনাকর স্থান জাহান্নাম।
বিশ্বমানবতার মুক্তির সনদ মহাগ্রন্থ আল কুরআনে মহান রাব্বুল আলামিন দুপ্রকার বিধান নির্দেশ দিয়েছেন। কতকগুলো পালনীয়, কতকগুলো বর্জনীয়। যেসব বিষয় পালনের নির্দেশ রয়েছে, তা যথার্থরূপে পালনের মধ্যে স্রষ্টার সন্তুষ্টি নিহিত। আর যেসব বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তা থেকে বিরত থাকা, পূর্ণরূপে বর্জন করা ইসলামের দাবি এবং একজন মুমিনের পরিচায়ক। ইসলাম শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামি শরিয়ত বিরোধী অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কঠোর বিধান আরোপ করেছে। সুখী ও শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামি অনুশাসন ও বিধি মেনে চলার তাগিদ দিয়েছে। পক্ষান্তরে ইসলামি বিধান অস্বীকার ও বিরোধিতাকে চরম ধৃষ্টতা ও মারাত্মক গর্হিত অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে। অন্যায়, অত্যাচার, পাপাচার, ব্যাভিচার, জুলুম, নির্যাতন, হত্যা, সন্ত্রাস, চুরি ও ডাকাতিসহ অসামাজিক সকল কার্যকলাপ ইসলাম নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
ইমাম সমাজের বরণীয় ব্যক্তি। তিনি ধর্মীয় সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। তার দায়িত্ব ও কর্তব্য অপরিসীম। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে ইসলামি বিধি-বিধান হেফাজত ও সংরক্ষণে তার অসীম দায়িত্ব রয়েছে। সকল প্রকার অন্যায়, অবিচার, দূরাচার, অশ্লীলতা, নগ্নতা, নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা ও অপরাধ প্রবণতা প্রতিরোধে ইমামের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বিরাট জনগোষ্ঠীর কর্মকা-ের জিম্মাদার। হাদিসে এসেছে, ‘ইমাম হচ্ছেন, ‘জমিদার’ এবং মুয়াজ্জিন হচ্ছেন আমানদার। হে আল্লাহ! তুমি ইমামদের সত্য পথে দৃঢ় রাখো এবং মুয়াজ্জিনদের ক্ষমা করো।’ তিনি নির্ভীকচিত্তে সত্য প্রচারে দীন প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। মানুষকে দীনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করবেন। ন্যায় ও কল্যাণের পথে অনুপ্রাণিত করবেন। দীনি দায়িত্ব পালনে সততা ও নিষ্ঠাবান হবেন। তিনি যদি ত্রুটিবিচ্যুতির প্রতি সজাগ না থাকেন, নিষ্ঠার পরাকাষ্ঠাকে আহত করে বসেন, অর্পিত দায়িত্ব পালনে সজাগ সচেতন ও যতœবান না হন, তাহলে বিপর্যয়, ক্ষতি, অকল্যাণ ও চরম অপমান সুনিশ্চিতও অবধারিত। সৎ কাজের প্রতি আহ্বান ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধকরণে তার অন্যতম গুরুদায়িত্ব। তাই সমাজ থেকে সব ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ দূরীকরণে ইমামের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
লেখক: কলামিস্ট/সম্পাদনা: আশিক রহমান