যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে তার অসামান্য ভূমিকা ছিল
জেয়াদ-আল্-মালুম
মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন শহীদুল হক মামা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ সংরক্ষণের আমৃত্যু কাজ করে গেছেন তিনি। তিনি আসলে একটি প্রেরণা। মুক্তিযুদ্ধকালীন গেরিলা বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন। অসীম সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করে স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধাকালীন অসামান্য অবদানের কথা আমরা জানি। জানি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালের তার ভূমিকার কথাও। আমরা জানি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধবিরোধীতাকারী ঘাতকদের বিচারের দাবিতে তার সক্রিয়তার কথা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিতে বিভিন্নভাবে তিনি আমাদের সহযোগিতা করেছেন। তার এই সহযোগিতা বিচারকাজে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ নিশ্চিতে তার সহযোগিতা, সক্রিয়তা, তৎপরতা ছিল উল্লেখ করার মতো। আমরা কাছ থেকে দেখেছি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ চলাকালীন সময়ে তার সক্রিয়তা। তিনি দেশকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন। সবসময়ই তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে কথা বলতেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে কাজ করে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে কখনো আপোস তিনি করেননি। বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বাঙালির অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষে তার অবস্থান ছিল সুদৃঢ়। তাকে কেউ টলাতে পারত না। কোনো লোভ লালসাও তাকে পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীন বাংলাদেশ পেতে তিনি অসামান্য ভূমিকা রেখেছিলেন। জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলেন। তার এই যুদ্ধ আমৃত্যু ছিল।
তরুণদের কাছে একজন অনুপ্রেরণা। আমরা জানি, ঘাতক কাদের মোল্লার রায়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা গণজাগরণ মঞ্চের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সবসময়ই তিনি গণজাগরণের পাশে ছিলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্দোলন বেগবান করতে, ঘাকতকদের বিচার নিশ্চিত করতে সুদূর সুইডেন থেকে দেশে ফিরেছিলেন। ছিলেন রাজপথে। গণজাগরণের সঙ্গে সম্পৃক্তদের কাছে তিনি একটি উৎসাহ। অনুপ্রেরণা। তিনি সবসময় তাদের উৎসাহিত করেছেন। তার এই মৃত্যু আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। মানুষ মরণশীল। তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তবু তিনি বেঁচে থাকবেন আমাদের মাঝে তার সাহসী ভূমিকার জন্য। তার প্রতি অতল শ্রদ্ধা।
পরিচিতি: প্রসিকিউটর, প্রশাসন, (এডিশনাল এ্যাটর্নি জেনারেল) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
সম্পাদনা: আশিক রহমান