নির্বাচন কমিশনের কাছে যা প্রত্যাশা করে মানুষ
ব্যারিস্টার এম. সরোয়ার হোসেন
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জুলাইয়ের শেষের দিকে নির্বাচন কমিশন সংলাপের পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। সংলাপের ক্ষেত্রে কমিশনের পরিকল্পনা অবশ্যই ভাল উদ্যোগ। নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করার ক্ষেত্রে এটি নিঃসন্দেহে একটি পজিটিভ দিক। কিন্তু বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি হবে না তা নির্ভর করবে ক্ষমতাসীন দলের ওপরে। বিশেষ করে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি নির্ভর করবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। নির্বাচন কমিশন যদিও একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কমিশনের ওপর অর্পিত সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে প্রায়শই তারা ফেল করে। বিদায়ী নির্বাচন কমিশন জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। আর বর্তমান নির্বাচন কমিশন কতটুকু জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ করতে পারবে বা কতটুকু সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে সাংবিধনিক দায়িত্ব পালন করবে তা নির্ভর করবে অনেকাংশে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের উপর। দেশের জনগণ দেখতে চায় কমিশন তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করছে। কমিশন যদি সরকারের কোনো চাপে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তাহলে তাদের উচিত হবে জনগণকে অবহিত করে দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করা।
জনগণ চায় স্বাধীনভাবে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে। জনগণের এই চাওয়া পূরণ করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে। আমরা জানি, নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচন পরিচালনার জন্য যত প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেটা আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু সব প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের আওতায় কাজ করে থাকে। আমরা অতীতে দেখেছি, নির্বাচনকালীন সময়ে গাজীপুরে পুলিশের এক এসপিকে বদলি করা হয়েছিল, আবার নির্বাচন শেষ হওয়ার পরপরই তাকে ওই জায়গাতে পুনর্বহাল করা হয়। অর্থাৎ সরকারে চাপে নির্বাচন কমিশন এক দাসত্বমূলক আচরণ করে থাকে। অর্থাৎ কমিশনের ওপর যে দায়িত্ব তারা সেটা দেখাতে পারে না। অথচ কমিশনের দৃঢ়তা ও সাহসিকতাই মানুষ আশা করে।
পরিচিতি: সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
মতামত গ্রহণ: বায়েজিদ হোসাইন
সম্পাদনা: আশিক রহমান