লন্ডনে এসিড সন্ত্রাসের শিকার দুই বাংলাদেশি
আনোয়ারুল করিম : লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনালগ্রিন এলাকায় এসিড জাতীয় পদার্থ নিক্ষেপে দুই বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বেথনালগ্রিন এলাকার রমান রোডে। আহতরা হলেন রংফুট ছেডুয়েল হিট এলাকার সাইফুর রহমান রবিনের পুত্র সাখাওয়াত হোসেন মোহন (২৪) এবং তার এক বন্ধু। তবে তার বন্ধুর নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। গুরুত্বর আহত মোহনকে পুলিশ উদ্ধার করে কমার্শিয়াল রোড এলাকার রয়েল লন্ডন হসপিটালে ভর্তি করে। হামলাকারীদের ধরতে স্থানীয়দের সহযোগিতা চেয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, সন্ধ্যার দিকে রমান রোডে রবিন ও তার বন্ধু প্রাইভেট কারে বসা অবস্থায় এক যুবক ও তরুণী গাড়ির জানালা দিয়ে এসিড জাতীয় পদার্থ ছুঁড়ে মারে। এরপর মোহন ও তার বন্ধু দৌড়ে পাশে বাংলাদেশি মালিকানাধীন একটি দোকানে গিয়ে পানি ঢালতে থাকেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও প্যারামেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে যায়। পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। মোহনের আত্মীয় এম এ বাসিত বলেন, তার (মোহনের) মুখ ঝলসে গেছে, চিকিৎসা চলছে।
হামলার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এক দোকানি বলেন, ‘আমার দোকানে দুইজন বাঙালি তরুণ এসে বলতে থাকে, আমরা এসিড আক্রান্ত হয়েছি। আমাদের শরীর পুড়ে যাচ্ছে পানি দাও। পানি দিলে তারা নিজেরাই শরীরে পানি ঢালতে থাকেন। এরপর খবর দিলে ২০ মিনিটের মধ্যেই পুলিশ চলে আসে।’ গত ১৩ জুলাই নর্থ লন্ডন ও ইস্ট লন্ডনে দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে ৫ জনের ওপর এসিড হামলার পর এটাই বড় হামলা।
বেশ কিছুদিন ধরে লন্ডনে এসিড হামলার ঘটনা ঘটছে। রাস্তাঘাটে ভিন্ন মত ও বর্ণের মানুষের ওপর কে বা কারা এসিড ছুঁড়ে মারছে। চলতি বছর লন্ডনে ইস্টার মানডেতে একটি নাইট ক্লাবে জড়ো হওয়া মানুষজনের ওপর এসিড মারা হয়। দুই জন এতে অন্ধ হয়ে যান। বাকিদের চেহারা বিকৃত হয়ে যায়।
হেইট ক্রাইম নামে এই হামলায় বেশি টার্গেট মুসলিমরা। ইংল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশে প্রায়ই খবরের শিরোনামে আসছে ‘হেইট ক্রাইম’ শব্দ দুইটি। এসেক্সের হয়ে ইংল্যান্ডে কাউন্টি খেলতে গিয়ে বাংলাদেশি ক্রিকেটার তামিম ইকবাল স্ত্রী-সন্তানসহ এই হামলার শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ায় তারা বেঁচে যান। সর্বশেষ এ তালিকায় ভুক্তভোগী হিসেবে যুক্ত হলেন বাংলাদেশি এই দুই তরুণ। সূত্র: ডেইলি মেইল, সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ