রিজার্ভ চুরি : দুই চীনা নাগরিক গ্রেফতার
হাসান আরিফ : পাতানো জুয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া রিজার্ভের টাকা ভাগবাটোয়ারার সন্দেহে দুই চীনা নাগরিককে গ্রেফতার করেছে হংকং পুলিশ। একই সঙ্গে তাদের ক্যাসিনোর ব্যাংক হিসাবও জব্দ করেছে কর্তৃপক্ষ। গ্রেফতার ডিং (৪৫) ও গাও শুহুয়া (৫৩) নামে এই দুই চীনা নাগরিক দীর্ঘদিন ধরে জুয়ার নেটওয়ার্ক চালাচ্ছেন।
ব্লুমবার্গ ডটকমের খবরে বলা হয়, এর আগে ক্যাসিনো ব্যবসায়ী ডিং ২০১৬ সালের মার্চে ও শুহুয়া আগস্টে চীনে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জুয়াকেন্দ্র ম্যাকাওতে ডিং ২০০৭ সালে একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান চালু করেন। তিনি জুয়াড়িদের এনে এখানকার ক্যাসিনোতে জুয়ার আসর বসাতেন। অন্যদিকে, শুহুয়া পেইচিংয়ে একটি ক্যাসিনো চালান। ফিলিপাইনে অন্তত ২৯টি জায়গায় তার ক্যাসিনো নেটওয়ার্ক রয়েছে।
হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়। গ্রেফতার দুই চীনা ব্যক্তি এই টাকার একটি অংশ সরিয়ে নিতে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের সহায়তা নিতে পারেন বলে ধারণা হংকং পুলিশের। ওই অর্থ তারা উত্তর কোরিয়াতেও পাঠিয়ে দিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় চলতি বছরের এপ্রিলে এক প্রতিবেদনে উত্তর কোরিয়ার জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছিল সাইবার নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিবিষয়ক অ্যান্টিভাইরাস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইও এ ঘটনায় উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের দায়ী করেছিল।
অন্যদিকে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় পিয়ংইয়ং জড়িত বলে অনেক আগে থেকেই দাবি করে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ)।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সাইবার জালিয়াতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পাঠানো হয় ফিলিপিন্সের রিজল ব্যাংকে। ওই অর্থের অধিকাংশ জুয়ার টেবিলে চলে গিয়েছিল, তবে উদ্ধার করা দেড় কোটি ডলার বাংলাদেশকে ফেরত দেয় ফিলিপিন্স।
বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলা এই ঘটনায় সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটি অর্থমন্ত্রীর কাছে এক বছর আগে প্রতিবেদন জমা দিলেও কয়েক দফা ঘোষণা দিয়েও তা প্রকাশ করেননি অর্থমন্ত্রী।
বাকি অর্থ উদ্ধারের আশা এখনও ছাড়েনি বাংলাদেশ। চুরির সব টাকা ফেরত আনার পর তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন বলে কয়েক মাস আগে মুহিত জানিয়েছিলেন।