উচ্চহারে কমিশনের আশায় ভেজাল ওষুধ বিক্রি করে ফার্মেসিগুলো
ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম
ভেজাল ওষুধ কারা বিক্রি বা উৎপাদন করে? যারা অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন করতে চায়, তারাই। বাংলাদেশে যেসব অপরাধ ও দুর্নীতি হয়, তা সংঘবদ্ধ উপায়ে হয়ে থাকে। এসব বিষয় যারা দেখভাল করেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলে থাকেন, আমাদের সামর্থ্য কম, প্রয়োজনীয় লোকবল নেই। এমনকি ভেজাল ওষুধ শনাক্ত করার মতো প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও নেই। এসব কথা বলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান। যার ফলে ভেজাল ওষুধ উৎপাদনকারীরা পাড় পেয়ে যায়। যখন তাদের কৌশল সবাই জেনে যায় তখন তারা নতুন কৌশল আবিষ্কার ও প্রয়োগ করে। এভাবেই বাজারে ভেজাল ওষুধ সরবরাহ হচ্ছে। ভেজাল ওষুধ খাওয়ার ফলে আমাদের জীবনের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাচ্ছে। তার মধ্যে বড় দুটি ঝুঁকি হচ্ছে, যে কারণে ওষুধ খাচ্ছি তার কোনো সমাধান হবে না, দ্বিতীয়ত হচ্ছে ভেজাল ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়েও আমাদের বাড়তি চিন্তা করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশে যত্রতত্র ওষুধ বিক্রি হয়। যে যার মতো ওষুধ বিক্রি করে বা কেউ কেউ ফার্মেসিগুলোতে দিয়ে যায়। আবার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ফার্মেসিগুলো থেকে সরাসরি ওষুধ বিক্রিও হয়। এসব যদি নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাহলে ভেজাল ওষুধ বিক্রি কিছুটা কমে আসতে পারে। ফার্মেসিগুলোর মাধ্যমে যে ভেজাল ওষুধ বিক্রি করা হয় তা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। ফার্মেসিগুলোতে কী পরিমাণ ওষুধ আসে-যায় তার কোনো হিসেব নেই বা কোনো হিসেব কর্তৃপক্ষকে দিতে হয় না, এটাই ভেজাল ওষুধ বিক্রির মূখ্য কারণ।
ফার্মেসিগুলো ওষুধ কোম্পানিগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিদের পরামর্শে গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে ভেজাল ওষুধ বিক্রি করে থাকে, সাধারণ মানুষ সেসব কিনে। নিশ্চয়ই সব ফার্মেসি এই অবৈধ কাজটি করে না। অনেকেই আছেন, যারা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ কিনে থাকে। শহরাঞ্চলেও এটা হয়ে থাকে। যেখানে যেখানে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই রোগীরা ওষুধ কিনে, সেখানে অবৈধ সরবরাহকারক বা অবৈধ প্রস্তুতকারকের সঙ্গে ফার্মেসিওয়ালাদের একটা যোগসাজশ থাকে। উচ্চহারে কমিশন পাওয়ার আশায় ফার্মেসিগুলোর মালিকেরা ভেজাল ওষুধ বেশি বিক্রি করে থাকেন। যা ঠিক নয়।
পরিচিতি: অধ্যাপক, প্যাডিয়াট্রিক সার্জারী বিভাগ, বিএসএমএমইউ
মতামত গ্রহণ: বায়েজিদ হোসাইন
সম্পাদনা: আশিক রহমান ও মোহাম্মদ আবদুল অদুদ