আর্থিক দুর্বলতায় বকেয়া সমন্বয়ের সুযোগ পাচ্ছে বীমা কোম্পানি
ডেস্ক রিপোর্ট : বীমা দাবি পরিশোধের আগে প্রিমিয়াম পরিশোধের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে ঘটছে উল্টো। প্রিমিয়াম না দিলেও কোম্পানিগুলোকে পুনঃবীমা দাবির অর্থ পরিশোধ করছে সাধারণ বীমা করপোরেশন (এসবিসি)। পরবর্তীতে বীমা দাবির টাকা থেকে প্রিমিয়াম সমন্বয় করে এসবিসিকে পরিশোধ করছে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো। বনিক বার্তা
এসবিসি বলছে, কোম্পানিগুলো আর্থিকভাবে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থায় বকেয়া সমন্বয় ছাড়া উপায় নেই। তা না হলে বছরের পর বছর প্রায় হাজার কোটি টাকার বীমা দাবি অপরিশোধিত হয়ে পড়ে থাকবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সাধারণ গ্রাহক।
এসবিসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর কাছে এসবিসির রিইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়াম বাবদ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। অন্যদিকে এর বিপরীতে কোম্পানিগুলোর পুনঃবীমা দাবির পরিমাণ ৭০০ কোটি টাকার উপরে।
এ বিষয়ে এসবিসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, আর্থিক দুরবস্থার কারণে কোম্পানিগুলোকে বকেয়া প্রিমিয়াম সমন্বয়ের সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে আইনে এমন বিধান নেই। আগামীতে কোম্পানিগুলোকে আর এমন সুযোগ দেয়া হবে না। জানা যায়, এসবিসির কাছে পুনঃবীমা দাবি করার বাধ্যবাধকতা রেখেই ১৯৮৪ সালের অর্ডিন্যান্স খ-১-এর মাধ্যমে বেসরকারি খাতে বীমা কোম্পানি গঠনের অনুমতি দেয়া হয়। মূলত তখন থেকেই পুনঃবীমা প্রিমিয়াম বকেয়া রাখার এ প্রবণতা চলে আসছে। তবে গত পাঁচ বছরে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে বকেয়া প্রিমিয়ামের পরিমাণ। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ৪৫টি সাধারণ বীমা কোম্পানির কাছে এসবিসির বকেয়া প্রিমিয়াম বাবদ জমেছে ৩৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭৭ টাকা।
জানা যায়, বিপুল পরিমাণ বকেয়া প্রিমিয়াম আদায়ে এসবিসিকে একাধিকবার তাগিদ দিয়েছে আইডিআরএ। তবে বেসরকারি খাতের সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোকে বাকিতে ব্যবসার অভিযোগে জরিমানা করা হলেও এসবিসির ক্ষেত্রে নীরব থাকছে সংস্থাটি।
এদিকে প্রিমিয়াম বকেয়া রাখলেও সাধারণ বীমা করপোরেশনের সরকারি সম্পত্তির বীমা থেকে অর্জিত আয়ে ভাগ বসাচ্ছে বেসরকারি কোম্পানিগুলো। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এসবিসি ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সরকারি সম্পত্তির বীমা করে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করেছে। তবে এ আয় থেকে অর্ধেক, অর্থাৎ হাজার কোটি টাকা দিতে হয়েছে ৪৩টি বেসরকারি সাধারণ বীমা কোম্পানিকে। ২০১৩ সালের জুলাইয়ে আরো দুটি সাধারণ বীমা কোম্পানি অনুমোদন পাওয়ায় এখন থেকে ৪৫টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানি এ সুযোগ ভোগ করবে। এরই মধ্যে মুনাফা ভাগাভাগির তালিকায় যুক্ত হয়েছে নতুন অনুমোদন পাওয়া সাধারণ বীমা কোম্পানি দুটির নাম। সম্পাদনা : মোনা হক