কালেমা শাহাদতের বিনিময় জান্নাত!
মুনশি মুহাম্মাদ আবু দারদা
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীতে মানুষ এবং জিন জাতিকে সৃষ্টি করছেন একমাত্র তার ইবাদত বা অনুগত করা জন্য! আর এই মানষ জাতির হেদায়াতের জন্য অনেক নবী রাসূলগন কে পাঠিয়েছেন! তারা সকলে উম্মতদেরকে কালিমার দাওয়াত দিয়েছেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাহ পড়ল, সে একদিন হলেও জান্নাতে যাবে! এখন দেখা যায় মানুষ এতো পরিমান গোনাহ করে তার কোন সীমা থাকে না! প্রশ্ন হয় এই কালিমা কি তাকে জান্নাতে নিতে পারবে? প্রথমে জেনে নিন, কিয়ামতের দিন সমস্ত গোনাহকে পাল্লার একপাশে রাখা হবে! আর শুধু কালিমায়ে শাহাদতকে অন্যপাশে রাখা হবে তবুও কালিমার পাল্লা বেশি ভারি হবে!
মানুষের ভাল কাজ করা এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি নিয়ামত! আল্লাহ যার জন্য কোন ভালো কিছুর আসা করেন তাকে নেক আমল করার তৌফিক বা সুযোগ করে দেন! রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তা’য়ালা যে সমস্ত বান্দার সাথে সুন্দর মোয়ামেলা করার ইচ্ছে করেন! তাকে মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত হলেও ভাল আমল করার তৌফিক দান করেন! এই ব্যপারে হাদিস শরিফে হযরত আনাস (রা:) বর্ণনা করেন রাসূল (সা:)বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা যখন কোন বান্দার সাথে সুন্দর মোয়ামেলা করার ইচ্ছা করেন তখন তাকে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত হলেও ভাল কাজ করার তৌফিক দান করেন! কিয়ামতের দিন কালিমায়ে শাহাদাতের ওজন সব কিছুর থেকে ভারি হবে! বর্ণিত আছে আখেরি নবীর উম্মতের মধ্যে যে সমস্ত উম্মত গোনাহে কাবিরা করার পরে তাওবা করেনি! অথবা অন্যের হক অন্যায় ভাবে আহরণ করার পরে আদায় করেনি! অথবা কারোর উপর অন্যায়ভাবে জুলুম করে তার কাছ থেকে নিজের জুলুমকে মাফ করিয়ে নেইনি! সুতারাং আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন ঐ সমস্ত ব্যক্তিদের গোনাহর হিসাব অনুযায়ী আজাব দিবেন! আরো বর্ণিত আছে! হতে পারে ঐ মহান দিবসে আল্লাহ তায়ালা নিজের রহম এবং গফ্ফারের সাথে কিছু গোনাহগার মানুষের সাথে ভলো নরম ব্যবহার করে! তাকে জান্নাতে দিবেন! সেটার পদ্ধতি হলো তামাম মাখলুকের মধ্য থেকে উম্মতি মুহাম্মাদির কিছু সংখ্যক মানুষকে আলাদা করবে! এবং তাদের সবার সামনে নিজের খারাবি আমল অর্থাৎ যে খাতায় গোনাহ লেখা হয়েছিল সেই নিরনব্বই টি রেজিস্টার পেশ করবে এবং বলবে দেখো! এই রেজিস্টারের মধ্যে আমার নিজুক্ত করা ফেরেস্তা তোমাদের উপর কোন জুলুম ইত্যাদি করেনি তো? তারা কোন আমল কম বেশি করে লিখেননি তো? তখন ঐ সমস্ত ব্যক্তি উত্তরে বলবে! হে আমাদের রব তারা কোন জুলুম করেনি! তখন আল্লাহ তা’য়ালা বলবেন তোমাদের কাছে এখন কোন ওজর খায়েশ তো নেই? তখন ঐ সমস্ত ব্যক্তি বলবে হে আমাদের রব! না আমাদের কাছে কোন প্রশ্ন আছে আর না কোন আমল আছে? এরপর আল্লাহ তায়ালা বলবেন কেন নেই? তখন আল্লাহ বলবেন আজ তোমাদের উপর কোন জুলুম করা হবে না?
সুতারাং আল্লাহ তা’য়ালা কোরআনে কারীমের এ আয়াতের বানি দ্বারা বুজা যায় ! ‘আজ প্রত্যেক মানুষকে তার আমলের বদলা দেওয়া হবে! কারোর উপর কোন ধরনের জুলুম এবং বে ইনসাফি করা হবেনা! সত্যিই আল্লাহ তায়ালা অতি তাড়াতাড়ি হিসাব নিকাশ করনে ওয়ালা!’
এরপর আল্লাহ তা’য়ালা বলবেন তোমাদের একটা নেকি আমার কাছে আছে! সেটা তোমরা জনো? এ কথা বলার পরে ফেরেস্তা একটি রেজিস্টার বের করবে! যার মধ্যে লেখা থাকবে কালিমায়ে শাহাদাত। তখন আল্লাহ তা’য়ালা বলবেন এই কালিমার রেজিস্টার কে পাল্লার এক দিকে আর অন্য দিকে তোমাদের গোনাহর ৯৯ রেজিস্টার রাখো! তখন মানুষেরা বলবে হে আমাদের রব কোথায় ৯৯ রেজিস্টার, আর কোথায় একটা রেজিস্টার এর মধ্যেতো আসমান জমিনের পার্থক্য! তখন আল্লাহ তা’য়ালা বলবেন শুনো আজ তোমাদের উপর কোন জুলুম করা হবে না!
সুতারাং এক পাল্লাই ৯৯ রেজিস্টার এবং অন্য পাল্লাই কালিমা শাহাদতের এক রেজিস্টার রাখা হবে! তখন দেখা যাবে ঐ কালিমার একটা রেজস্টার নিরেনব্বই রেজিস্টার থেকে বেশি ভারি! ভারি হওয়ার কারন হল আল্লাহর নাম সমস্ত জিনিষের থেকে বরকতপূর্ণ এবং ভারি হয়!
আরো হাদিস শরীফে বর্নিত আছে! হযরত আমরুবনুল আচ(রা:) থেকে বর্ণিত আমি হুজুর (সা:) থেকে এ কথা বলতে শুনেছি কিয়ামতের দিন সমস্ত মাখলুকের থেকে আমার এক বান্দাকে আলাদা করা হবে!এবং তার সামনে গোনাহের ঐ ৯৯ রেজিস্টার উপস্থিত করা হবে! এবং সেই রেজিস্টার খোলা ও থাকবে! তারপর আল্লাহ তায়ালা বলবেন কি খবর দেখো এর মধ্যে কোন আমল তোমার অস্বিকার করার মতো আছে নাকি? আর আমার কোন ফেরেস্তা তোমাদের কোন ভাল আমল ছেড়ে তোমাদের উপর কোন জুলুম করেছে নাকি? তখন ঐ সমস্ত ব্যক্তি বলবে হে আমাদের রব, আপনার নিযুক্ত করা ফেরেস্তা কোন জুলুম করে নাই! তারপর আল্লাহ তায়ালা বলবেন এখন তোমাদের কোন অজুহাত আছে কিনা? ঐ সমস্ত ব্যক্তি বলবে নাই হে আমাদের রব তখন আল্লাহ তা’য়ালা বলবেন কেনো নেই? তোমরা জনোনা আমার কাছে তোমাদের একটা নেকি আছে যার কারনে তোমাদের কে জন্নাত দেওয়া হবে! আজ তোমাদের উপর কোন জুলুম করা হবে না! সুতারাং একটা কাগজ আনা হবে তার মধ্যে লেখা থাকবে শাহাদাত।
এরপর আল্লাহ তা’য়ালা বলবেন, এখন তোমাদের নিরেনব্বই রেজিস্টার কে সামনে আনো! তখন গোনাহগার বলবেন হে আল্লাহ কোথায় নিরেনব্বই রেজিস্টার আর কোথায় একটা কাগজ? আসমান জমিন পার্থক্য! তখন আল্লাহ বলবেন নিঃসন্দেহ আজ তোমাদের উপর কোন জুলুম করা হবে না! বর্ণিত আছে গোনাহগারদের ঐ নিরেনব্বই রেজিস্টার এক পাল্লাই এবং ঐ কাগজ অন্য পাল্লাই রাখা হবে তবুও ৯৯ পাল্লা একটি কাগজের কাছে হালকা হয়ে যাবে! এবং কালিমা শাহাদাতের কাগজ ভারি হয়ে যাবে! এ কারনে যে আল্লারর নামের বিপরিতে কোন জিনিষ ভারি হতে পারেনা! দেখো আল্লাহ যার সাথে সুন্দর ব্যবহার করে যে শুধু কালেমার পরিবর্তে জান্নাতে দিয়ে দিবে! কিন্তু এমন সবার সাথে করবে না! প্রায় সবার সাথে হিসাব নিকাসের অনুযায়ী মোআমেলা করবে! যে গোনাহর তাকে প্রথমে শাস্তি দিবে এর পরে জান্নাত দান করবে! আল্লাহ তায়ালার কাছে আমাদের আসা আছে আল্লাহ আমাদের সবার ঐ কিয়ামতের দিন রহমের মোআমেলা করবেন!