আজ বিশ্ব বাবা দিবস আয় খুকু আয়
নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘একমাত্র পুত্রসন্তানের সঙ্গে আমার ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পাঁচ বছর ধরে সে আমাকে ছেড়ে অন্যত্র থাকে। ঘর-সংসারও করেনি। কোথায় থাকে, কী করে, বেঁচে আছে কি না, সেটাও জানি না। একবার খোঁজ-খবরও নেয় না। তার উপার্জন আমি চাই না। শুধু চাইÑ ছেলেটা আমার কাছে ফিরে আসবে। কামনা সবসময়ই করিÑ ছেলেটা যা-ই করুক, ভালো যেন থাকে। কীভাবে শুভ কামনা না করে থাকব, ও তো আমারই সন্তান, সেদিন না হয় রাগই করেছিলাম, এ রাগ কি আমার এখন আছে?’
গতকাল রাতে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে সন্তান সম্পর্কে মনের কথা এভাবেই ভাগাভাগি করেন একজন বাবা। যিনি নিজের নামও প্রকাশ করতে চাননি। কারণ জানতে চাইলে বলেন, বাবাদের নাম তো বাবাই।
এই বাবাদের জন্য বিশেষ দিন এলো আজ বছর ঘুরে। আজ বিশ্ব বাবা দিবস। বিশ্বজুড়ে বাবাদের সম্মান আর ভালবাসা জানাতে মা দিবসের সম্পূরক হিসেবে প্রচলন হয় বাবা দিবসের।
সন্তানের জন্য বাবার ভালবাসা অসীম, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ‘কাটে না সময় যখন আর কিছুতে/ বন্ধুর টেলিফোনে মন বসে না/জানলার গ্রিলটাতে ঠেকাই মাথা/ মনে হয় বাবার মতো কেউ বলে না/ আয় খুকু আয়, আয় খুকু আয়…।’ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে এই কালজয়ী গান যুগে যুগে মেয়ের প্রতি বাবার ভালবাসার ছবি এঁকে যায়।
মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর তার সন্তান হুমায়ুনের প্রতি ভালবাসার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে আছেন চলমান শতকেও। হুমায়ুনের জীবনের বিনিময়ে নিজের জীবন ত্যাগ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি। এমন স্বার্থহীন যার ভালবাসা, সেই বাবাকে সন্তানের খুশির জন্য জীবনের অনেক কিছুই ত্যাগ করতে হয়।
বাবা দিবসে সন্তানদের সামনে সুযোগ আসে বাবাকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানানোর। অনেক সন্তান আছে, যারা মা-বাবাকে দেখাশোনার প্রতি খুব একটা মনোযোগী নয়। মা দিবস বা বাবা দিবস তাদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
বিশ শতকের গোড়ার দিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবর্তন ঘটে বাবা দিবসের। ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন জুন মাসের তৃতীয় রোববার বাবা দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেন।
বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৮৭টি দেশ বাবা দিবস পালন করে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশেও বেশ ঘটা করে পালিত হচ্ছে বাবা দিবস। উপহার দিয়ে, টেলিভিশন ও বেতারে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে, সংবাদপত্রে বিশেষ লেখা প্রকাশ করে পালিত হচ্ছে বাবা দিবস। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী