কংগ্রেসের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই ক্ষতির কারণ হয়েছে, বললেন প্রণব মুখার্জি
ইমরুল শাহেদ : ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখাজি ইন্ডিয়া টুডের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সোনিয়া গান্ধী কখনো কাউকে কোনো মিথ্যা আশ্বাস দেন না। তিনি এটা করবেন বা ওটা করবেন – এমন ধরনের কোনো কথা নেই তার মধ্যে। অতিরঞ্জিত কিছুই কখনো বলেন না। কেউ যদি তাকে কিছু জিগগ্যেস করে তিনি মিথ্যা কথা বলবেন না। ভুল তথ্যও দেবেন না। তিনি ভারতীয় রাজনীতিবিদদের থেকে একেবারেই আলাদা। সোনিয়া গান্ধী এবং মনমোহন সিং দুজনেই ২০১৪ সালের নির্বাচন নিয়ে বলেছিলেন পরিস্থিতি খুবই জটিল। এতে কোনো নাম্বার দেওয়া যাবে না।
২০১৪ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রণব মুখার্জি বলেন, নির্বাচনি প্রচারণা যখন তুঙ্গে তখন সোনিয়া গান্ধি এবং মনমোহন সিং ছাড়া অনেক কংগ্রেস নেতা, প্রধানত মন্ত্রীরা আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা তখন আমাকে বলেছে, কংগ্রেস ১৬০ থেকে ১৭০ আসন পাবে। আর বিজেপি পাবে ১৮০ আসন। কিন্তু পিযুষ গয়ালই আমাকে বলল বিজেপি কমপক্ষে ২৬০ আসন পেতে যাচ্ছে। আমি দেখলাম তার কথা ছিল উল্লিখিত সংখ্যার খুব কাছাকাছি।
২০১৪ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের ইউপিএ প্রথম জোটটি ছিল চমৎকার। কংগ্রেসের এককভাবে ছিল ১৪৭ আসন। এছাড়া আমাদের প্রতি সমর্থন ছিল বাম দল, সমাজতান্ত্রিক দল ও সমাজবাদী দলের। তারা আমাদের জোটে ছিল না। জোটের মধ্যে সমঝোতা ছিল। বেশ ভালোই চলছিল। কিন্তু ইউপিএর দ্বিতীয় জোট সে রকম নয়।
দ্বিতীয় জোটে সমস্যা কি ছিল জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, কংগ্রেসের ভরাডুবির কারণ ছিল তাদের যে ২০০ আসন ছিল সেগুলোকে তারা মনে করেছে ২৮০ আসনের সমান। তখন তাদের মধ্যে একটা গা-ছাড়া ভাব তৈরি হয় এবং কারো মতামতই তারা নিচ্ছিল না। দ্বিতীয়ত জোটের ক্ষেত্রে ২০১২ সালেই মমতা ব্যানার্জী জোট থেকে বেরিয়ে যায়। তাকে নিয়ে কাজ করা কঠিন এটাও সত্য। কিন্তু তারপরও তাকে সামাল দেওয়া প্রয়োজন ছিল। কারণ তার হাতে রয়েছে লোক সভার ১৯টি আসন। আমি তার সঙ্গে মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে মুখোমুখি বিত-া করেছি। তিনি আমার উপর প্রচ- রেগে ছিলেন। তারপরও আমিই তাকে জোটে রেখেছি। আমি জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট হলাম আর তিনি অক্টোবর মাসে জোট ছেড়ে চলে গেলেন। প্রথম জোটের সময়ই আমরা বেসামরিক পরমাণু চুক্তি সম্পাদন করি। দ্বিতীয় জোট সেটা সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে নিতে পারেনি।
হয় আমরা ক্লান্ত বা অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। এসব কারণেই ২০১৪ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি।
রাহুল গান্ধীর কংগ্রেসের সভাপতি হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, সে এখন উঠতি নেতা। কঠোর পরিশ্রম করছে। কংগ্রেসের নেতারাই সিদ্ধান্ত নিবে রাহুল সভাপতি হবে কি হবে না। দলের বয়স এখন ১৩২ বছর। সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে